লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম

লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও কাদের সিদ্দিকীর ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানসহ (কার্জন) অন্তত ১১ জনকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে ডিআরইউ থেকে তাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। হেফাজতে নেওয়াদের মধ্যে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা, আইনজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ প্রাঙ্গণ থেকে তাদের পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ডিআরইউ থেকে কয়েকজনকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে।

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদ বলেন, ‘এখন তো এখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না। তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে না ছেড়ে দেওয়া হবে, সেটা ঊর্ধ্বতনেরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

পরে শাহবাগ থানার ওসি জানান, আটকদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ডিবি।

এর আগে সকালে ডিআরইউর শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর আত্মপ্রকাশ ও লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রথম কর্মসূচি হিসেবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও গণফোরামের সাবেক সভাপতি ড. কামাল হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

আলোচনাসভায় প্রথমে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন)। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।’

অধ্যাপক কার্জনের বক্তব্য শেষ না হতেই একদল ব্যক্তি স্লোগান দিতে দিতে ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। তারা ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘জুলাইয়ে যোদ্ধারা এক হও লড়াই করো’ স্লোগান দিতে দিতে গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় তারা আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ এলে তাঁদের কাছে অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের তুলে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন যুবক ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকী ও অন্যান্য উপস্থিত ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং মিলনায়তনে প্রবেশ ও অবস্থান ঠেকাতে চেষ্টা করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সব দল-মতের মুক্তিযোদ্ধাদের এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা প্রোগ্রাম শুরু করেছিলাম। লতিফ সিদ্দিকী সাহেব এসেছেন, তবে কামাল হোসেন সাহেব আসেননি। এর মধ্যে ২০-২৫ জন যুবক এসে হইচই শুরু করে এবং আমাদের ঘিরে ফেলে। তবে তারা কারও গায়ে হাত দেয়নি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।’

রমনা বিভাগের এডিসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লতিফ সিদ্দিকীসহ কয়েকজনকে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে ভাঙা একটি টেবিল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে অনুষ্ঠান অংশগ্রহণকারীদের পাশাপাশি কিছু লোককে হট্টগোল করতে দেখা যায়।

Link copied!