পছন্দের ডায়েট কোক খেতে চাইলেন আমির হোসেন আমু, অনুমতি দিল না আদালত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম

পছন্দের ডায়েট কোক খেতে চাইলেন আমির হোসেন আমু, অনুমতি দিল না আদালত

ছবি: সংগৃহীত

কারাবন্দি সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু পছন্দ করেন ডায়েট কোক খেতে; তাকে এই পানীয়টিসহ স্যান্ডউইচ ও পানি খাওয়ানোর অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন তার আইনজীবী। তবে অনুমতি মেলেনি।

সরকার পতনের দিন যাত্রাবাড়ীতে এক শ্রমিক হত্যা মামলায় আমুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম আরিফুর এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির এসআই শাখাওয়াত হোসেন আমুকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন গত ২৮ অগাস্ট। আদালত আসামির উপস্থিতিতে এদিন শুনানির জন্য দিন ঠিক করেছিলেন।

শুনানিতে হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয় সাবেক এই মন্ত্রীকে। পরে অবশ্য এসব খুলেও ফেলা হয়। এছাড়া বয়স ও অসুস্থ বিবেচনায় বসার জন্য টুল দেওয়া হয় আমুকে।

গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে তার আইনজীবী মহসিন রেজা আমুকে খাবার খাওয়ানোর অনুমতি চান।

আইনজীবী রেজা বলেন, “তিনি (আমির হোসেন আমু) অসুস্থ। আধা ঘন্টা পর পর তাকে খাবার খেতে হয়।”

এ সময় স্যান্ডউইচ, পানি খাওয়ানোর অনুমতি প্রার্থনা করেন এই আইনজীবী।

তখন প্রসিকিউশনের ইন্সপেক্টর মো. জাহিদ আদালতকে বলেন, “টেস্টিংয়ের একটা বিষয় থাকে।”

পরে আদালত খাবার খাওয়ানোর আবেদন নামঞ্জুর করে দেয়।

আদালত থেকে বের হয়ে আমুর আইনজীবী রেজা সাংবাদিকদের বলেন, “আমু সাহেব অসুস্থ, বয়স্ক ব্যক্তি। চিকিৎসকের নির্দেশনা আছে আধা ঘন্টা পর পর খাবার খাওয়ানোর। আজ স্যান্ডউইচ, ডায়েট কোক খাওয়ানোর আবেদন করেছিলাম। উনি এগুলো খান। আজ সাতজন ছিলেন। এজন্য সাতটা ডায়েট কোক, স্যান্ডউইচ, পানি নিয়েছিলাম।

“এর আগেও আদালত তাকে খাওয়ার পারমিশন দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করে বলে খাবার টেস্টিংয়ের একটা ব্যাপার আছে। আজ আদালত পারমিশন দেননি।”

তার আইনজীবী এ সময় বলেন, আমির হোসেন আমু ডায়েট কোক খেতে পছন্দ করেন।

আমুর আরেক আইনজীবী মহিমা বাঁধন বলেন, “উনার (আমির হোসেন আমু) বয়স ৮০ বছরের ঊর্দ্ধে। এ বয়সে যত ধরনের রোগ থাকার কথা সবই উনার আছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে এ আইনজীবী বলেন, “উনার স্ত্রী অনেক আগে মারা গেছেন। আর বিয়ে করেননি, নিঃসন্তান। ছেলেমেয়ে নেই। উনার পরিবারের লোকজন নেই। উনাকে দেখভাল করার জন্য উনার ম্যানেজারসহ যারা আছেন তারা আসেন, যোগাযোগ করেন।”

মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ৫ অগাস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ৩৫ বছর বয়সী মো. রিয়াজ।

পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াজকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফারজানা বেগম ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২১৩ জনকে আসামি করে গত ২২ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। আমু এই মামলার একজন আসামি।

গত বছরের ৬ নভেম্বর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

তার আইনজীবী মহসিন রেজা বলেন, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আমু। আওয়ামী লীগের ২০০৯-১৪ মেয়াদের সরকারের একেবারে শেষ দিকে দপ্তর পুনর্বণ্টেনে তাকে ভূমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করলে আমির হোসেন আমুকে দেওয়া হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

২০২০ সাল থেকে ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র হিসেবে আমু দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

Link copied!