সমন্বয়কদের নির্বাচন

সামান্তা শারমিনের সামনে আরেক নারী নেত্রী

গোলাম রাব্বানী

মার্চ ১২, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম

সামান্তা শারমিনের সামনে আরেক নারী নেত্রী

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে নারী নেতৃত্বের প্রতীকই বলা যায় সামান্তা শারমিনকে। এর আগে নাগরিক কমিটির মূখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ফলে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দর্শন নিয়ে অনেকেই প্রশংসা করেছেন। ক্যাম্পাস জীবনেও সরব ছিলেন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। তাই এবার ঢাকার আসন থেকে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে ঢাকা ৯ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন তিনি। তবে মজার বিষয় হলো এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দীতায়ও নারী নেতৃত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচনী আসন: ঢাকা ৯

ঢাকা ৯ আসনটি ঢাকা মেট্রপলিটন খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মান্ডা সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬ ও ০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। সীমানা পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন চৌধুরী এই আসন থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হন। সেসময় তার বিপরীতে বিএনপির নেত্রী শিরীন সুলতানা ও আফরোজা আব্বাস লড়াই করছিলেন। বর্তমানে বিএনপির এই ‍দুই নেত্রীর মধ্যে যে কোন একজন এই আসনে লড়াই করবেন। তবে আফরোজা আব্বাসের প্রতিদ্বন্দীতা করার সম্ভাবনা বেশি। 

ভোটের চিত্র

ঢাকা ৯  আসনে ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৬। বিএনপি এই নির্বাচন অংশ না নেয়ার কারনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। ৯০ হাজার ৩৯৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের কাজী আবুল খায়ের পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৭৯৪ ভোট।

তবে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয়ী হন সাবের হোসেন চৌধুরী। এ নির্বাচনে সাবের হোসেন চৌধুরী ২ লাখ ২৪ হাজার ২৩০ ভোট। নিকটতম বিএনপির আফরোজা আব্বাস ৫৯ হাজার ১৬৫ ভোট।

এদিকে ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন অংশ না নিলে এই আসনে সাবের হোসেন চৌধুরীর একক কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। সে নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবের হোসেন চৌধুরী পান ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী বিএনপি নেত্রী শিরিন সুলতানা পান ৯২ হাজার ২২৭ ভোট।

মূলত ২০০১ সালের বাংলাদেশ আদমশুমারিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি লক্ষ করার পর, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে জনসংখ্যার পরিবর্তন প্রতিফলিত করার জন্য সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে এই নির্বাচনী আসন সৃষ্টি করে।

এর আগে ঢাকা ৯ আসনটি মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি থানা ও হাজারীবাগের একাংশ নিয়ে গঠিত ছিল। আর বর্তমানে সংসদীয় আসনটি তখন ঢাকা ৬, ঢাকা ৫ ও ঢাকা ৮ আসন নিয়ে গঠিত ছিল। তবে এই আসনে সাবের হোসেন চৌধুরী ব্যতীত কেউেই সংসদ সদস্য হয়নি। তবে বিএনপির খিলগাও,সবুজবাগ সহ ওয়ার্ডগুলোর ইউনিট বেশ শক্তিশালী। সম্প্রতি বিএনপির বেশ কয়েকটি জনসভায় এই ইউনিটগুলো থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনসমাগম দেখা যায়। ফলে এই আসনে বিএনপির শক্ত অবস্থান স্পষ্ট। এদিকে সব কিছু ঠিক থাকলে আফরোজা আব্বাস এই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এদিকে জামায়াতে ইলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও খিলগাঁও জোনের সম্মানিত পরিচালক মাওলানা ফরিদুল ইসলাম এই আসনে বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদি তিনি নমিনেশন পান তাহলে এই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল খিলগাও,মুগদা,মান্ডা এলাকা। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষেরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি সক্রিয় আন্দোলনে অংশ নেয়। ফলে এই আসনে জুলাই অভ্যুত্থানের ইস্যুটি কাজে লাগাতে চাইবে প্রার্থীরা। সেদিন থেকে সামান্তা শারমিন এগিয়ে রয়েছেন।

Link copied!