বঙ্গবন্ধু পরিষদ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগামী ২০২৬ সালের এপ্রিলের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন করার ঘোষণা বিএনপির মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে।
এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপি আবারও এবছরের ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন আয়োজনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
শনিবার সকালে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম এই নির্বাচনের সময়সূচিকে অবাস্তব ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার অবজ্ঞা হিসেবে সমালোচনা করেছে।
বিবৃতিতে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও জনগণের ব্যাপক ত্যাগের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে এই আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্যের পরেও নির্বাচন আয়োজনে বিলম্ব জনসমাজকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।
বিএনপি রমজান মাস, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং আবহাওয়ার অনিশ্চয়তা বিবেচনায় নিয়ে এপ্রিলের নির্বাচনের পরিকল্পনা কঠিন ও অসম্ভব বলে জানায়।
বৃহস্পতিবার রাতের জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে, যা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, এপ্রিলের নির্বাচন প্রস্তাব দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে চাওয়া জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের জনগণ ভোটাধিকারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গুম, হত্যাকাণ্ড, কারাবরণ, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও ঐকমত্যের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে, বিএনপি নেতারা বলেন, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাবের অধীনে কাজ করছে, যা সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ফলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি জানিয়েছে, এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন আয়োজন করলে তা রমজান মাস ও কঠিন আবহাওয়ার কারণে প্রচারণা ও নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করবে। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো যুক্তি উপস্থাপন করেননি কেন ডিসেম্বরেই নির্বাচন সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঈদ-উল-আযহার বাণী হিসেবে দেওয়া বক্তব্যটি জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে ব্যবহৃত কিছু শব্দ রাজনৈতিক শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে দলের নেতারা মনে করেন।
অধিকন্তু, প্রধান উপদেষ্টা নিজেই ভাষণে স্বীকার করেছেন যে, বন্দর ও করিডর ব্যবস্থাপনা বিষয়গুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
বিএনপি কঠোরভাবে এবছরই সময়মতো নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় জোর দিয়েছে।