ডাকসুতে উপাচার্যের ক্ষমতা সীমিত চায় ছাত্রশিবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম

ডাকসুতে উপাচার্যের ক্ষমতা সীমিত চায় ছাত্রশিবির

ডাকসু নির্বাচনের জন্য ৯ টি সংস্কার দিয়েছে ছাত্র শিবির।

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে (ডাকসু) অনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা সীমিত করার পাশাপাশি কার্যনির্বাহী পরিষদকে শক্তিশালী করার প্রস্তাবসহ মোট ৯টি সংস্কার প্রস্তাবনা তারা উপস্থাপন করেছে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্র শিবির। ১৩ জানুয়ারি র বিকেল ৩টায় মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস.এম. ফরহাদ এবং সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান। এছাড়া, প্রস্তাবনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন ঢাবি শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের মতে, ধারা ৫(ক)-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সংসদের সভাপতি হিসেবে নির্ধারণ করা হলেও তার হাতে অসীম স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা রয়েছে, যার ফলে নির্বাচিত সদস্যদের বরখাস্ত বা সংসদ বাতিলের ক্ষমতা তার হাতে থাকে। এটি গণতান্ত্রিক নীতির বিরুদ্ধে। শিবিরের প্রস্তাব অনুযায়ী, সভাপতির এই ক্ষমতাগুলো সীমিত করে তাকে শুধুমাত্র আলঙ্কারিক পদে পরিণত করার এবং তার সমস্ত ক্ষমতা নির্বাহী পরিষদের হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, কিছু সম্পাদকীয় পদে পরিবর্তন আনার প্রস্তাবও রয়েছে, যেমন নারী ও সমতা বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক।

গঠনতন্ত্রের পরিবর্তনের ক্ষমতা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের হাতে থাকলেও, শিবিরের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই ক্ষমতা ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের একটি প্রস্তাব ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে দেওয়া উচিত।

নির্বাহী কমিটির সভায় কোনো এজেন্ডা আলোচনার জন্য সভাপতির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার এবং গঠনতন্ত্রের অনুল্লেখিত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সভাপতি একক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে সংসদের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের সংশোধনীতে গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত ধারা ২(ক) সংস্কার করে, স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ও লালনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।

ডাকসুর "লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"-এ কিছু নতুন ধারার সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সার্থকতা ও অধিকার আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। ডাকসুর কার্যাবলীতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা এবং গণতন্ত্র চর্চা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবও রয়েছে।

Link copied!