নভেম্বর ১২, ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে, সে বয়ান জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের আস্থা নিয়ে সংস্কার করবে হবে। সেটা একমাত্র সম্ভব নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। অনির্বাচিত কোন সরকার তাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ও দর্শনের সেভাবে সংস্কার করা সুযোগ নেই। যে সমস্ত সংস্কার ঐক্যমতে আছে সেগুলো বাস্তবায়নের আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে সে বয়ান জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব উনার একটা বয়ান তৈরি করেছিল বাংলাদেশ কীভাবে চলবে। আবার স্বৈরাচারের একটা বয়ান ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনার আরেকটা বয়ান ছিল যে উন্নয়ন গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে চলে গেছে। উন্নয়ন আর গণতন্ত্র যে হাত ধরে চলে সেটা সে বিশ্বাস করে নাই। গণতন্ত্রের মাধ্যমে উন্নয়ন হবে। উন্নয়নের মাধ্যমে গণতন্ত্র হয় না। ফ্যাসিস্টরা সবসময় উন্নয়নের কথা ব্যবহার করে।
আরও পড়ুনঃ বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানো ঠিক হয়নি: রিজভী
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন বলেন, আমরা ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করাতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ১৬ বছরে জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। ত্যাগ-জুলুমের মধ্যে দিয়ে বিএনপি নতুন বিএনপিতে পরিনত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ত্যাগ করতে শিখেছে, রক্ত দিতে শিখেছে ও জীবন দিতে শিখেছে। আমরা গনতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটারধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার লড়াই থেমে থাকবো না।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। আমরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি এবং যাব। সবাই মিলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছি। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র পক্ষের কাজ করতে হবে। হাসিনা পালানোর পর দেশের মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন হয়েছে। যে দল ও ব্যক্তি বুঝতে পারবে না, তাদের রাজনৈতিক বেশি দূর এগোতে পারবে না।
আমীর খসরু বলেন, বিএনপি শুধু বিপ্লব নয়, বিএনপি সংহতি। বিএনপি জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের কথা বলছে। আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যেটা প্রতিষ্ঠিত করব সেটাই থাকবে। তাই বিএনপি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। স্বাধীন মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়। দেশকে সঠিক ট্যাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে যদি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ নাগরিকদের এই প্রত্যক্ষ ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। যখন একটি রাষ্ট্রে এটি প্রমাণিত হবে যে, কোনোভাবেই নাগরিকের ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া সম্ভব নয় তখন বোঝা যাবে নাগরিকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটসের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের রহমতুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজি প্রমুখ।