আগস্ট ১০, ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি বলে দাবি করেছেন তার একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। বলেছেন, “গত ৫ আগস্ট আমার মা শেখ হাসিনা পদ ত্যাগ করেননি।” সেই সঙ্গে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আদালতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ জানানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন হাসিনা-পুত্র।
ওয়াশিংটনে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন তিনি। এ সময় গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে বঙ্গভবনে পদ ত্যাগের বিষয়ে শেখ হাসিনার কোনও হাত ছিল না।
রয়টার্সকে জয় বলেন, তার (শেখ হাসিনার) পরিকল্পনা ছিল যে একটি বিবৃতি দেওয়ার পর পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তখন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন লক্ষ্য করে পদযাত্রা শুরু করে দিয়েছে এবং তখন তার হাতে সময় একদমই ছিল না। এমনকি আসার আগে গোছানোর সময়ও তার কাছে ছিল না। তাই সাংবিধানিকভাবে এখনও তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা তুলে ধরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, “সেনাপ্রধান ও বিরোধী রাজনীতিবিদদের পরামর্শে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজের পদে থাকা সত্ত্বেও যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, সেটা নিয়ে আমরা আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি।”
শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার সেই সরকারের উপদেষ্টারা শপথও নিয়েছেন। জয় জানান, সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “আমার বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসবে। যদি না আসে, সেক্ষেত্রে আমরা বিরোধী দল হবো। কোনও সমস্যা নেই।”
এদিকে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করানো যেতে পারে বলে বৃহস্পতিবারই মতামত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই মতামত চেয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের (মতামত) পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টির ওপর মতামত দেন।
সাত সদস্যের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য ছয় সদস্য হলেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপিল বিভাগের মতামত চাইতে পারেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন বলে বিশেষ রেফারেন্সের (১/২৪) মাধ্যমে আপিল বিভাগ মতামত দিয়েছেন।