রোজার মাসেও চলছে অশ্লীল সিনেমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ৬, ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম

রোজার মাসেও চলছে অশ্লীল সিনেমা

ছবি: সংগৃহীত

রোজার মাসেও অশ্লীল সিনেমা চলছে রাজধানীর একটি প্রেক্ষাগৃহে। সূত্রের খবর, রোজার মাসের এক বিকেলে পুরান ঢাকার আজাদ সিনেমা হলে ঢুকতেই চোখে পরে হলটির দেওয়াল সাটানো অশ্লীল সিনেমার পোস্টার । ছোট পোশাক পরা চিত্রনায়িকা পলির অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির পোস্টার যেন নীরবে সাক্ষ্য দিচ্ছে বাংলা সিনেমার কালো এই অধ্যায়ের কথা।

রোজার মাস হলেও নির্দ্বিধায় দিনেদুপুরেই চলছে এসব সিনেমা । দর্শকরাও বেশ মনোযোগ দিয়ে অশ্লীল পোস্টারের নায়িকার দিকে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন।

টানা দুই দিনের অনুসন্ধানে এলাকাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া যায় বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। অশ্লীল সিনেমার পাশাপাশি দেদারসে চলে মাদক সেবন ও দেহ ব্যাবসা। ঘেন্না আর ভয়ে বিষয়টি জনসমক্ষে আনেন না এলাকাবাসী। কিন্তু তারপরও এই প্রতিবেদকের কাছে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।

রায়সাহেব বাজারের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এই হলের ভেতর দেহ ব্যবসা হয়। টাকার বিনিময়ে মেয়ে নিয়ে অনেকে ঢোকে। এরপর অনৈতিক কাজ করে। অন্য আরেকজন জানায় মাদকসেবীরা সারাদিনই হলের ভেতর নেশায় বুঁদ হয়ে বসে থাকে।’

‘বি-গ্রেড’ সিনেমার সয়লাব এবং রুচিহীন-বল্গাহীন কর্মকাণ্ডে বহু আগেই এই হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দর্শক। হলের কর্মকর্তাদের কাছে দর্শকদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা সাফ জানিয়ে দেন, ‘এই হলে কেউ সিগারেট পর্যন্ত খায় না।’ কেন অশ্লীল সিনেমা চালানো হচ্ছে এর উত্তরে কর্মকর্তারা বলেন, ‘নতুন সিনেমা নাই তো তাই এসব চালানো হয়। এসব পোস্টার দেখলে হলে লোক হয়।’

ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহটির বর্তমান অবস্থাও অনেকটাই জরাজীর্ণ। হলের ভিতরের পরিবেশ অনেকটাই পরিত্যাক্ত বাড়ির মতো ভূঁতুড়ে। দেয়ালগুলোও যৌবন হারিয়েছে বহু আগেই । খসে পড়ছে দেয়ালের ইট-সিমেন্টও।

হলের ওপরে টিনের চালা,  ফ্যানগুলোও এখন আর চলে না ।  ভূঁতুড়ে পরিত্যাক্ত বাড়ির চেয়েও বেহাল দশায় আছে এই সিনেমা হল। আর এমন অবস্থা দেখে শুধু মানুষ নয়, ভয়ে স্বয়ং ভূতও পালাবে বলে মনে করেন পুরান ঢাকাবাসী।

চলচ্চিত্রের সোনালী যুগের অবসানের পর ‘৯০ দশকের শেষদিকে ঢালিউডে কাটপিস সিনেমার আগ্রাসন শুরু হয়। ২০০০ সালের দিকে দেশের সিনেমায় মুনমুন, ময়ূরী, পলি, ঝুমকাদের বিচরণ শুরু হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয়ের অভিযোগ উঠতে থাকে। যে কারণে সিনেমাপ্রেমী মানুষ হল বিমুখ হতে শুরু করেন। এখনও অশ্লীল সিনেমার প্রদর্শনী  ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রায় শত বছর পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই আজাদ সিনেমা হল।

Link copied!