ছবি: সংগৃহীত
সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে চোর বলে সম্বোধন করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদেরও সমালোচনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে দেয়া একটি পোস্টে এই সমালোচনা করেন তিনি।
নাজমুল আলম লেখেন, ‘যেই *** লুটপাট করে দলটাকে শেষ করল অতিরঞ্জিতভাবে, অতিকথনে টেলিসামাদ স্টাইলে রাজনীতিকে জোকারিতে পরিণত করল তাদের বিরুদ্ধে লিখলেই একদলের জ্বালা ওঠে এভাবে যে, এখন ঐক্যের সময় এগুলো লেখা যাবে না, আবার ক্ষমতায় গেলে এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে। মোটকথা হলো আমরা তাদের পক্ষে লিখে তাদের সব হালাল করবো। আমাদের পরিবার জীবন দেবে আর তারা সুটেট-বুটেড হয়ে আবার নেত্রীর চারপাশ দখলে রাখবে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘অনেকদিন নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে চুপ থাকলাম, কিন্তু আমার মাথায় আসে না নেত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নতিসাধন করেছেন। কিন্তু আমাদের সরকারের সময়ের চাইতে এবারের রমজানে তেমন লোডশেডিং হয়নি। তার মানে হলো প্রধানমন্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিদ্যুৎ চোর বিপু এবং কিছু চোর আমলাদের সমন্বয়ে কৃত্রিম লোডশেডিং তৈরি করতো এবং নিজেদের পছন্দের পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবসায়ীদের রমরমা একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়ে সিন্ডিকেট করে কমিশন কামাতো।’
বিপু বড় ব্যবসায়ী বংশের রাজনৈতিক নেতার ছেলে ছিল উল্লেখ করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আমাদের নেত্রী ভালো চিন্তা করেছিল, মনে করেছিল বড় লোকের ছেলে দায়িত্ব দিলে দুর্নীতি করবে না। কিন্তু না, নেত্রীর বিশ্বাস ভেঙে দিয়ে সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ চোরে পরিণত হয়েছে বিপু। বিপু একটা চোর চোর চোর, ওর বউ চোর ভাই চোর সন্তানরা চোর। ওদের গত ১০ বছরের চলাচল দেখলে মনে হয় বিপু রাজা আর আমরা প্রজা।’
বিপুর সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য বিএনপি-জামাতের নেতারা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দেখাশোনা করছে জানিয়ে নাজমুল আলম বলেন, ‘ক্ষমতা এবং টাকার কারণে নিজেদের ঈশ্বর মনে করতো চরিত্রহীন বিপুর পরিবার। ওই পরিবারের পুরুষদের চাইতে নারীরাও পিছিয়ে নেই। দে আর পার্ভার্টেড বাই সোশ্যালি অ্যান্ড সেক্সুয়ালি। বিপু চোর বিপু চোর বিপু চোর। এই চোরের চুরির কারণে এবং বিপুর কেরামতিতে রাজনীতিকে রাজপথ থেকে এসি রুমে এবং ফাইভ স্টারে নিয়ে গেছে। রাজনীতিকে ছাত্র যুবক শ্রমিক থেকে করপোরেটে নিয়ে গেছে, রাতের বেশ্যাদের কাছে নিয়ে গেছে। ফলশ্রুতিতে আমরা ধ্বংস হয়েছি।’
তিনি আরও লিখেন, ‘মুসলমানরা ফিলিস্তিনিদের রক্ষার জন্য যেমন আবাবিল পাখির অপেক্ষায় বসে আছে, তেমনি আমরা আওয়ামী লীগের লোকজন শক্তিশালী কিংবা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অপেক্ষায় বসে আছি, যে তারা আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। বিপু তার ছেলেমেয়েদের লাক্সারিয়াস লাইফ লিড করাচ্ছে। কিন্তু আমি আপনি আমাদের ছেলেমেয়েদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করাতে হিমশিম খাচ্ছি। আমি সরকারি দলে থাকতেও সমালোচনা করেছি, নিজের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিয়েছি, বড় বড় রথী-মহারথীদের সঙ্গেও অন্যায় ইস্যুতে ছাড় দেইনি, দিবওনা।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘নেত্রী জীবিত যতদিন থাকবেন ততদিন রাজনীতি করার চেষ্টা করবো। আমার স্পষ্ট অবস্থান থেকে নেত্রী যেদিন থাকবে না সেদিন থেকে আর রাজনীতিও করবো না। নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে অনেকবারই বলেছেন এই আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া সবাইকে কেনা যায়। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমি শতভাগ বিশ্বাস করি এবং মানি।’