বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এবং নাট্যাঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তী অভিনেত্রী ডলি জহুর। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী ৪৮ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য ধারাবাহিক ও একক নাটক এবং শতাধিক চলচ্চিত্রে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছেন। তার স্বীকৃত হিসেবে দুইবার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। যার একটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং অন্যটি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেত্রী বিভাগে। তবে এখন ছোট-বড় কোনো পর্দায়ই তেমন দেখা যায় না তাঁকে। কিছুদিন আগেও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা, আবারও তাঁকে চলচ্চিত্রে দেখা যাবে কিনা— এসব বিষয় নিয়ে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ এর সাথে কথা হলো ডলি জহুর এর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিফাত সুলতানা।
দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ: কেমন আছেন এখন?
ডলি জহুর: ভালো থাকার চেষ্টা করি সব সময়। এই বয়সে তো ভালো থাকা যায় না। প্রতিমুহূর্তে কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই থাকছে। চিকিৎসা চলছে। ডাক্তারের কাছে যাতায়াত, এভাবেই বাকি সময়টা যাবে আরকি!
দ্য রিপোর্ট: দেশের চলচ্চিত্রের অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে না। এ অঙ্গনের উন্নতিতে আপনার পরামর্শ কি?
ডলি জহুর: যে কোনো জায়গায় কিছু ধরতে গেলে শক্ত হাত লাগে। যেই দিকটায় ধরো না কেন, একটা শক্ত হাতের প্রয়োজন হয়। চলচ্চিত্রে হয়তো শক্ত হাতের অভাব এখন। যদি আবার শক্ত হাত আসে, তাহলে চলচ্চিত্র আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। রাতের পর দিন আসবেই।
দ্য রিপোর্ট: চলচ্চিত্রে আপনাকে আবার দেখা যাবে কিনা?
ডলি জহুর: চলচ্চিত্র তো এখন আর করি না। চাইলেই তো করতে পারবোও না। যদি ভালো কাজ কেউ তৈরি করে, তা পেলে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে নিয়ে কাজ করবো। আমাদের মিডিয়া টা তো খুব ছোট। এখানে আমাদের নিয়ে গল্প হয় না। এরা চ্যালেঞ্জ নেয় না। এরা চায় একটু কমার্শিয়াল, গ্ল্যামার, কালারফুল কিছু। তরুণদের নিয়ে গল্প তৈরি হয়। তাছাড়া অর্থনৈতিক সমস্যা তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে চাইলেও কাজ হচ্ছে না।
দ্য রিপোর্ট: ভালো কাজ তৈরীতে প্রবীণ শিল্পীদের প্রয়োজন নেই বলে কি মনে করেন?
ডলি জহুর: ভালো কাজ তো মেকাররা তৈরি করবে। আমরা তো কিছু না। আমরা শুধু মশলা। হলুদ মরিচ লবণ আমরা। দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী গল্প তৈরি করতে হবে। সেখানে আমাদের প্রতি দর্শক চাহিদা থাকলে কাজ হবে। এখন বিভিন্ন রকমের থিম হচ্ছে। আমাদের সময় এসব ছিলো না। গল্প ও চিন্তাধারায় পরিবর্তন এলে পরে প্রবীণ শিল্পীদেরও দেখা যাবে।
দ্য রিপোর্ট: নতুনদের জন্য আপনার বার্তা কি?
ডলি জহুর: নতুনদের বলবো, ধীরে ধীরে আগাও। বেশি কষ্ট করো না। দেখে দেখে কাজ করো।
দ্য রিপোর্ট: ঈদ কীভাবে কাটাবেন?
ডলি জহুর: আমাদের আর এখন ঈদ কোথায়? বাচ্চারা ঈদ করে, ওদের দেখে বাহব্বাহ দিই। খেতে দিই। এভাবেই সময় কেটে যায়।
দ্য রিপোর্ট: দর্শকদের উদ্দেশ্য কি কিছু বলবেন?
ডলি জহুর: দর্শকদের বলবো, আমাদেরকে ভুলো না, যতদিন আছি আমাদের ভালোবাসা দিয়ে যেও। চলচ্চিত্রের অবস্থা ফেরাতে হলমুখী হতে হবে। আমাদেরকে আরও ভালোবাসতে হবে।