এপ্রিল ২৮, ২০২১, ০৬:১৫ পিএম
করোনা রোগীর থেকে তার পরিবারের সদস্যদের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও কমিয়ে দিতে পারে টিকা। এতদিন শুধুমাত্র রোগীর উপরেই করোনা টিকার প্রভাবের বিষয়টি জানা গিয়েছিল। কিন্তু ব্রিটেনের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, একজন রোগীর থেকে তার বাড়িতে পরিবারে বাকি সদস্যদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে টিকা। তা-ও আবার একটি মাত্র ডোজ নেওয়ার পরই।
ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি টিকার প্রভাব পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ইংল্যান্ডের গবেষণাকারী সংস্থা ‘দ্য পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’ (পিএইচই)। প্রায় ২৪ হাজার পরিবারের ৫৭ হাজার রোগীর তথ্য সংগ্রহ করেছিল তারা। তাঁদের মধ্যে কতজন টিকা নিয়েছিলেন আর কতজন নেননি তার তূলনামূলক বিচার করে সংস্থাটি দেখেছে, যাঁরা টিকা নিয়েও আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা বাকি রোগীদের তুলনায় সংক্রমণ ছড়িয়েছেন কম। টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে যাঁদের, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে তাঁরা টিকা না নেওয়া রোগীদের তুলনায় ৩৮-৪৯ শতাংশ কম সংক্রমণ ছড়িয়েছেন।
ফাইজারের টিকা ভারতে এখনও সে ভাবে পাওয়া না গেলেও অ্যাস্ট্রেজেনেকার সঙ্গে মিলে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে করোনা টিকা কোভিশিল্ড। এই মুহূর্তে ভারতে দেওয়া হচ্ছে এই কোভিশিল্ড টিকা। আগামী ১ মে দেশ জুড়ে এবং ৫ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গে ১৮ ঊর্ধ্বদের এই টিকাই দেওয়া হবে, যার জন্য নাম নথিভুক্তকরণ পর্ব ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের ওই সংস্থার দাবি অনুযায়ী যদি টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পরই পারিবারিক সংক্রমণের আশঙ্কা ৫০ শতাংশ কমে যায়, তবে ভারতের করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতিতে তা অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশা জাগছে বিশেষজ্ঞ মহলে।
পিএইচই-র দেওয়া এই তথ্যটি সামনে আসার পর এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকাতে এই তথ্য অত্যন্ত উপযোগী বলে মন্তব্য করে ম্যাট বলেন, ‘‘এটা একটা দারুণ খবর। টিকা যে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাতে পারে, তা ইতোমধ্যেই জেনেছি আমরা। এ বার জানলাম এটি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াও আটকাতে পারে।’’
এর আগে টিকা সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ তথ্যে বলা হয়েছিল, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর যে কোনও ব্যক্তির থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা ৬৫ শতাংশ কমে যায়।
সূত্র: আনন্দবাজার।