গ্রীষ্মের আগ মুহুর্তে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে ধরে হাজারেরও বেশি করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি বেড়ে চলছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সুরক্ষার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে বারবার গুরুত্বারোপ করে আসছেন।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ১৩ মার্চ সবার মাস্ক পরা নিশ্চিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) চিঠি দিয়েছে।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর হার গত কয়েক মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সংক্রমণের হার রোধের জন্য সর্বক্ষেত্রে সবার মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এছাড়া মাস্ক পরার ক্ষেত্রে সরকারের ১১টি নির্দেশনা উল্লেখ করে তা প্রতিপালনের জন্য নাগরিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই নির্দশনায়। পরে সোমবার (১৫ মার্চ) এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
সরকারি ওই তথ্য বিবরণীতে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে সরকারের কিছু নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।
সরকারের নির্দেশনাগুলো হলো-
০১. সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অফিসে আগত সেবাগ্রহীতারা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০২. সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসহ সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে আসা সেবাগ্রহীতারা আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৪. শপিংমল, বিপণিবিতান ও দোকানের ক্রেতা-বিক্রেতারা আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করবেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও মার্কেট ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৫. হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক ব্যবহার করবেন। মাস্ক পরা ছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতারা কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করবেন না। স্থানীয় প্রশাসন ও হাট-বাজার কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৬. গণপরিবহনের (সড়ক, নৌ, রেল, আকাশপথ) চালক, চালকের সহকারী ও যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গণপরিবহনে আরোহণের আগে যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মালিক সমিতি বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৭. গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ সব শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মালিকরা বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
০৮. হকার, রিকশা ও ভ্যানচালকসহ সকল পথচারীর মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করবেন।
০৯. হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কর্মরত ব্যক্তি এবং জনসমাবেশ চলাকালীন আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করবেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মালিক সমিতি নিশ্চিত করবেন।
১০. সব সামাজিক অনুষ্ঠানে আগত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান নিশ্চিত করবেন।
১১. বাড়িতে করোনা উপসর্গসহ কোনো রোগী থাকলে পরিবারের সুস্থ সদস্যরা মাস্ক ব্যবহার করবেন।