বিদ্যানন্দকে অ্যাপার্টমেন্ট দিতে চান তসলিমা!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৯, ২০২৩, ০৯:১১ পিএম

বিদ্যানন্দকে অ্যাপার্টমেন্ট দিতে চান তসলিমা!

বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম। একজন উদ্যোক্তার ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে নিজেদের কাজের সাথে কোলাজ করে ফেসবুক পেইজে আপলোড করে প্রতিষ্ঠানটি। তারপর থেকেই শুরু বিতর্কের। প্রশ্ন উঠতে থাকে সংগঠনটির অতীতের অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে। নেটিজেনদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত বিনিময় শুরু হয়।

এসব আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই বিদ্যানন্দকে নিয়ে লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর ফেসবুক পেইজে মন্তব্য করেছেন। সেই পোস্টে তিনি বিদ্যানন্দকে নিজের একটি অ্যাপার্টমেন্ট দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।

ফেসবুক পোস্টে তসলিমা লেখেন, আমি ভাবছি আমার শান্তিনগরের অ্যাপার্টমেন্টটি আমি বিদ্যানন্দকে দান করে দেব। ওই ফ্ল্যাটে বসে আমি এক সময় মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য, সুস্থ সুন্দর অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের জন্য, নারীর সমানাধিকারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লেখালেখি করেছি। 

তসলিমা নাসরিনের করা সেই পোস্টে বাংলাদেশকে নিয়েও উঠে এসেছে তীর্যক মন্তব্য। 

পাঠকের জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

বাংলাদেশ নামক পোড়া দেশে ভালো কাজের দাম নেই। সত্যিকার দেশপ্রেমের মূল্য নেই। সৎ এবং নিঃস্বার্থ মানুষের জায়গা নেই। ও দেশে সে কারণে আমার জায়গা হয়নি। আমার সততা আর সভ্যতাকে ও দেশ চরম অপমান করেছে, চরম অসম্মান করেছে, সত্য বলেছি বলে আমাকে অন্যায়ভাবে অত্যাচার করেছে। ওই দেশে সত্য ভূলুণ্ঠিত, ওই দেশে মিথ্যের জয়জয়কার। ওই দেশের চরিত্র আমি খুব ভালো করে জানি, ওই দেশকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। 

ওই দেশের মূর্খ ধর্মান্ধরা বিদ্যানন্দ নামের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে লেগেছে, যেহেতু বিদ্যানন্দ ভালো কাজ করছে, যেহেতু বিদ্যানন্দ নিঃস্বার্থ এবং সৎ। বিদ্যানন্দ কী কী ভালো কাজ করেছে আমার জানার দরকার নেই। যখন অপশক্তি সরব হয় কারও বিরুদ্ধে, আমি বুঝি সে মানুষটি নিশ্চয়ই মানুষের মঙ্গলের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। স্বার্থহীনতা ঠিক কী জিনিস এবং মানুষ কেন স্বার্থহীন হয় তা বুঝতে স্বার্থান্ধ লোকের চিরকাল অসুবিধে হয়। 

আমি ভাবছি আমার শান্তিনগরের অ্যাপার্টমেন্টটি আমি বিদ্যানন্দকে দান করে দেব। ওই ফ্ল্যাটে বসে আমি এক সময় মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য, সুস্থ সুন্দর অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের জন্য, নারীর সমানাধিকারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লেখালেখি করেছি। ওই ফ্ল্যাটে বসে বিদ্যানন্দের কর্মীরা মানুষের দারিদ্র ঘোচানোর জন্য, মানুষকে শিক্ষিত এবং সভ্য করার জন্য কাজ করবে। স্বপ্নবান মানুষদের জন্য এটুকু কেন, এর চেয়েও অনেক বেশি করতে  পারি। সৎ এবং নিঃস্বার্থ মানুষরাই আমার উত্তরসুরি, তাদেরই আমি আত্মীয় বলে মানি।

[facebook-post]https://www.facebook.com/nasreen.taslima/posts/3000226493455122[/facebook-post]
Link copied!