আজ ৭ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। এদিন বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয় ভুটান। ভারতের পর ভুটানের স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জোরালো সমর্থন জানাতে থাকে। পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধ করতে পাকিস্তান সরকারের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি হযG
১৯৭১ সালের এদিন ভোরের দিকে ভারতীয় প্যারা ট্রুপাররা সিলেট বিমানবন্দরের কাছে নামার পর ওই এলাকায় পাকিস্তানের সেনাদের প্রধান ঘাঁটিতে হামলা চালায়। হামলায় টিকতে না পেরে বিকেলের মধ্যে সিলেটের দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানি জেনারেল তার সৈন্যদের নিয়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।
এদিন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর নবম ডিভিশন উত্তর দিক থেকে যশোর সেনানিবাসে পৌঁছে যায়। তারা কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই প্রবেশ করেছিলেন। জনশূন্য সেনা স্থাপনা দেখে তারা বিস্মিত হয়েছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবেশের খবর পেয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের বিশাল অস্ত্রসম্ভার, গোলাবারুদ এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মানচিত্র রেখে সেনানিবাস থেকে পালিয়ে যায়।
১৯৭১ সালের এদিন সোভিয়েত নেতা লিওনিড ব্রেজনেভ বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান।
এদিন, ময়মনসিংহের ভালুকায় মেজর আফসারের সৈন্যরা তিন দিক থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প ও পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এদিন মিত্রবাহিনী চান্দিনা ও জাফরগঞ্জের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। কুমিল্লা ও লাকসামে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলতে থাকে। এদিকে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের করতোয়া সেতুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ চলতে থাকে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে। ভারতকে আর্থিক সাহায্য প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মুক্তিযুদ্ধের এসময় যুদ্ধজয়ের একটা ক্ষীণ আশার আলো যেমন ছিলো, তার পাশাপাশি ছিল নানাধরণের অনিশ্চয়তা। তার পরেও এই মুক্তিকামী বাঙ্গালীকে দমাতে পারেনি কোনো কিছু।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন বই-পুস্তক ও গবেষণা থেকে সংগৃহীত ঘটনাবলী নিয়ে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের দর্শক ও পাঠকদের জন্য প্রতিবেদন সিরিজ ‘বিজয়ের দিনলিপি’ তৈরি করা হয়েছে। দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের ইউটিউব চ্যানেলেও প্রতিবেদনটি ভিজুয়ালি দেখা যাবে।