করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার একদম প্রাথমিক উপায় হচ্ছে বারবার হাত ধোয়া ও মাস্ক ব্যবহার। এতে যে করোনা হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে গবেষনায় দেখা গেছে, এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে অন্তত ৬৫ শতাংশ সংক্রমণ কমানো সম্ভব।
দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথম থেকেই এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার ওপর বেশি জোর দিয়েছে সরকার। শুরু থেকেই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি বেশি বেশি হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে দেশের সকল গণমাধ্যমে ব্যপক প্রচার প্রচারণা চালিয়েছে সরকার।
চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত হাত ধোয়া ও মাস্ক পরলে ৬৫ শতাংশ করোনা রোধ করা যায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্ক পরা বাধ্যতামুলক করতে কঠোর অবস্থানের কথা বারবার ব্যক্ত করেছেন। যার প্রেক্ষিতে মাস্ক পরা ও হাত ধোয়া বলতে গেলে একটা সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
হাত ধোয়া ও মাস্ক পরায় এগিয়ে রয়েছে দেশের তরুণ সমাজ। দেশের অর্ধেকেরও বেশি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী করোনা থেকে নিজকে রক্ষায় যথেষ্ঠ জ্ঞান রাখেন। তবে গবেষণা দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে। কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে তারা সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং হাঁচি কাশি দেয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
দেশের ৮টি বিভাগের ১০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৬৭৫ জন কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীর ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
ইউএসএআইডি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ‘ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন’ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মিটিং দ্য আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্প’ গত বছরের মে মাসে ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে তরুণদের পুষ্টি সচেতনতা, আচরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা’ বিষয়ে একটি র্যাপিড সমীক্ষা চালায়।
সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে প্রকল্পের পরিকল্পনা সমন্বয়ক বিশেষজ্ঞ প্রজ্ঞায়ন বেহেরা এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ভামি বোরা বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে এবং বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে যেসব পরিবারের আয় ১ লাখ টাকার কম। সমীক্ষায় অংশ নেয়া কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তারা গৃহে কিংবা গৃহের বাইরে শরীর চর্চা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দৌঁড়, স্ট্রেচিং ও ইয়োগা। উত্তরদাতাদের ৪৫ শতাংশ ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমিয়েছে। ৫৫ শতাংশ ঘুমিয়েছে ৭ ঘণ্টার কম।
মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের এগিয়ে থাকার বিষয়ে ডা: নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা একটু বেশি সচেতন। বেশি সময় বাসা বাড়িতে থাকার কারণে গণমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন সচেতনতামুলক অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন দেখে তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয়। তাছাড়া শরীর চর্চার বিষয়েও মেয়েরা বেশি সচেতন।