কানাডায় ঢুকতে পারেননি ডা.মুরাদ হাসান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ১১, ২০২১, ০৪:৪২ পিএম

কানাডায় ঢুকতে পারেননি ডা.মুরাদ হাসান

অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করাসহ অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ফাঁসের ঘটনার পর নৈতিক স্খলনের দায়ে পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে দেয়নি দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি।

কানাডার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কানাডাভিত্তিক বাংলাভাষী সংবাদমাধ্যম ‘নতুন দেশ’ একং দেশটিতে বসবাসরত ডা. মুরাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

‘নতুন দেশ’ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়,  ডা. মুরাদ হাসান এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩১ মিনিটে টরন্টোর পিয়ারসন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এর পরপরই কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ‘নতুন দেশ’ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে কানাডার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা ডা. মুরাদ হাসানের কাছ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান। কর্মকর্তারা বাংলাদেশের সদ্য সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে জানান, বিপুলসংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে কানাডা সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।

দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা ডা. মুরাদকে কানাডায় ঢুকতে দিতে অসম্মতি জানান। এরপর তাকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের বিমানে তুলে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে (ফ্লাইট নম্বর-ইকে-৮৫৮৫) কানাডার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ডা. মুরাদ হাসান।

এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন ডা. মুরাদ।

এদিকে, থানায় অভিযোগ দায়ের করার ফলে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটও দায়ের করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মুখে বিতর্কিত এই নেতা দেশত্যাগ করলেন।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করাসহ অভিনেত্রী মাহির সঙ্গে ফোনালাপে তাকে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন মুরাদ হাসান।

এসব ঘটনায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েন মুরাদ হাসান। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। কোনো কোনো বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহিত হওয়ার পর তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

Link copied!