যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, জিয়াউর রহমান সংবিধান, গণতন্ত্র এমনকি সেনা আইন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চালু করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশে। শুধু তাই নয়, শেখ জামালসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের রক্তে রঞ্জিত জিয়াউর রহমানের হাত। জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার আজকের প্রজন্মের সময়ের দাবি।
বঙ্গবন্ধুর সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামালের ৭০তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ পরশের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাংবাদিক ও লেখক আবেদ খান প্রমুখ।
শেখ জামালের স্মৃতিচারণ করে শেখ পরশ বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সেনা অফিসারদের সন্তানদের মতোই ভালবাসতেন। সেই সন্তানতুল্য একদল উশৃঙ্খল সেনা কর্মকর্তাদের হাতেই তার ছেলে লে. জামালের ও নিজের প্রাণ গেলো। আজ শেখ জামালের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের অযুত ভালোবাসা, গর্ব ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে পেশাগতভাবে দক্ষ ও চৌকস বাহিনী হিসেবে।
তিনি বলেন, জামালের রক্তপাত ঘটানো সেনাবাহিনীর সদস্যদের সেনা আইনে বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন সে সময়ের সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ ও উপ-সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত, তার প্রমাণ পাওয়া যায় জিয়ার পরবর্তী কার্যকলাপের মধ্যেই। সেনাবাহিনীর যে সদস্যরা হত্যা করেছিল তাদের বিচার না করে যেন জিয়ার অবৈধ সরকার খুনিদের পুরষ্কৃত করে! সেই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার করা যাবে না বলে দায়মুক্তি অধ্যাদেশও জারি করে জিয়াউর রহমানের পার্লামেন্ট। খুনিদের বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়, দু’জন খুনিকে জনগণের ভোট চুরি করে জাতীয় সংসদে সদস্যপদ দেওয়া হয়। এমনকি খুনিদের দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ করে দেয়।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, জিয়াউর রহমানের বিএনপির নেতৃবৃন্দ যখন গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলে, ওদের লজ্জা পাওয়া উচিৎ। এ দেশের মানুষের কাছে মাফ চাওয়া উচিৎ অন্যায় এবং জাতির সাথে প্রতারণা করার জন্য।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ফারুক খান বলেন, শেখ জামালের জন্মদিনে তাকে স্মরণ করায় যুবলীগকে ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে শুধু শেখ জামালের জন্মদিন পালন করলে হবে না, শেখ জামাল সম্পর্কে জানতে হবে, মানুষকে জানাতে হবে। শেখ জামাল লেখাপড়া করতে পছন্দ করতেন, যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বই পড়তে আগ্রহ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবেদ খান বলেন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে আমাকে যখন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তখন থেকে আমরা দেখেছি কী অবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতি চলছে। খালেদা জিয়া, এরশাদ, তারেক রহমানরা চলে যেতে পারে কিন্তু তাদের প্রেতাত্মারা রয়ে যাবে। বিভিন্নভাবে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে গ্রাস করার চেষ্টা করবে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ জামালের জন্মদিনে আমাদের আনন্দ করার কথা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে ঘাতকের বুলেটের আঘাত আমাদের সেই আনন্দ চিরতরে স্তব্ধ করে দিয়েছে। আজও সেই খুনিরা ওঁত পেতে আছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে চলেছে উন্নয়নের মহাসড়কে, সেই মুহূর্তে বিএনপি-জামায়াত তাদের বিদেশি প্রভুদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।