পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি প্রবাসী বাংলাদেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয় ওরফে সোহাগ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আটক হয়েছেন বলে গুঞ্জন ওঠেছে।
আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড আ্যালার্ট জারির পরই দুবাই পুলিশ গতকাল সোমবার তাকে আটক করে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে পালাতে পারে বলে বাংলাদেশ পুলিশ এরইমধ্যে ইন্টারপোলকে অবহিত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুবাই পুলিশ আরাভ খানকে নজরে রাখে এবং আটক করে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একটি সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পুলিশের কোনো সংস্থা এ ব্যপারে অনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেননি। পুলিশের ওই সূত্রটি বলেছেন আগামী দু-এক দিনের মধ্যে পুলিশের একটি দল তাকে ফিরিয়ে আনতে যাবে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া মনজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পলাতক আসামি আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়কে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করার জন্য পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখা কাজ করছে। সে যাতে অন্য কোথাও যেতে না পারে সে বিষয়টিও ইন্টারপোলকে অবহিত করা হয়েছে।’
এর আগে, গতকাল সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। ইন্টারপোল সেই আবেদন গ্রহণ করেছে।
সম্প্রতি দুবাইয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ করে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্স নামে একটি শোরুমের উদ্বোধন করার পরই ব্যঅপক আলোচনায় আসেন আরাভ খান। ওই সময় পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আরাভ খানকে শনাক্ত করে বাংলাদেশ পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জন্ম নেওয়া আরাভের আসল নাম রবিউল ইসলাম হলেও সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন নামেও তিনি পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হওয়ার পর হত্যা মামলায় আসামি হয়ে দেশ ছাড়েন আরাভ।
তবে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যার পর ডিবি পুলিশ তাতে আটক করে। ডিবি অফিসে দুদিন আটকে রাখার পর পুলিরে এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অনুরোধে রবিউল ওরফে আরাভ খানকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ।
এই বিষয়টি নিয়ে গত চারদিন ধরে দেশের একাধিক গণমাধ্যম তথ্য প্রকাশের পর গতকাল সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবিষয়ে মুখ খোলেন। তিনি জানান, “পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজনের কথা আমরা খতিয়ে দেখছি। উপযুক্ত সময়ে আমরা তা আপনাদের জানাব।”
এদিকে, আরাভ খানের আটকের বিষয়টি সত্য হলে তাকে ফেরত আনা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আরাভ খান আটক হয়ে থাকলে তার বিচার করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে বন্দী প্রত্যার্পণ চুক্তি না থাকায় আরাভ খানকে ফেরত পাঠাতে চাইবে না দেশটি।