আগুনে পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ব্যবসায়ীদের জন্য রমজানের আগেই অস্থায়ীভাবে ব্যবসা শুরুর ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যাতে তাঁরা ঈদের আগে বেচাকেনা করে ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারেন। অস্থায়ী এ ব্যবস্থা দুই মাসের বেশি সময় ধরে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এখন দম ফেলার ফুসরত নেই এখানকার ব্যবসায়ীদের। পাইকারি, খুচরা বিক্রেতা আর দেশের নানা প্রান্তের ব্যবসায়ীদের ভিড়ে এখন মার্কেটটিতে বেচাকেনা বেশ জমজমাট।
রবিবার বঙ্গবাজারে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে নানা ডিজাইনের পোশাক দিয়ে দোকানগুলোকে সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর এসব পোশাক কিনতেই প্রতিদিন এখানে আসছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাথার ওপর ছাতা রাখা হলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে দিনের বেলায় দোকানে বসা খুবই কষ্টকর। রোদের তাপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ছাতা কিনেছেন। আবার কেউ কেউ ত্রিপল টাঙিয়েছেন। ক্রেতারাও অস্বস্তিতে থাকেন।
অস্থায়ী বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এভাবে ব্যবসা করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও তাঁদের কাছে নেই পর্যাপ্ত পুঁজি। টাকার অভাবে চাহিদামতো পণ্য তুলতে পারছেন না তাঁরা।
এদিকে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের চৌকিতে বসানোর সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছিল, অস্থায়ী এসব দোকানে শামিয়ানা টাঙানো হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হবে। সরেজমিনে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, শামিয়ানা তাঁরা নিজেরাই টাঙিয়েছেন। বিদ্যুৎ এলেও তাতে শুধু রাতে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা হয়েছে। প্রচণ্ড রোদের তাপের মধ্যেও সেখানে ফ্যান ব্যবহারের অনুমতি নেই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটে (বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, মহানগরী ও আদর্শ) মোট দোকান ছিল ২ হাজার ৯৬১টি। এখন এই দোকানগুলোর চিহ্ন নেই। এ ছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে ৫৯টি ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সে ৩৪টি দোকান আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গবাজারে সব মিলিয়ে ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মালপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকার বেশি। আর মার্কেটগুলোর কাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।