ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরদিনই জামিন পেলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিম।
বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর।
আগামী ৬ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন হিসেবে ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে সকালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান ইরফান সেলিম।
গতকাল বুধবার ইরফান সেলিমসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন একই আদালত। শুনানিকালে অনুপস্থিত থাকায় আদালত ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদকে মারধরের মামলা তদন্ত করে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরফানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলার অপর চার আসামি হলেন- ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, গাড়িচালক মিজানুর রহমান, মদিনা গ্রুপের কর্মকর্তা এ বি সিদ্দিক দীপু ও কাজী রিপন।
এদের মধ্যে জাহিদুল বর্তমানে কারাগারে আছেন। কাজী রিপন পলাতক। মিজানুর ও দীপু জামিনে মুক্ত আছেন।
২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মমিনুল হক।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে ওয়াসিফ আহমেদ স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের কাছে পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি। এ সময় ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে এসে থামলে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়ির জানালায় নক করেন। তখন গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে ওয়াসিফকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। মারধরে তাঁর একটি দাঁতও পড়ে যায়।
গাড়িতে হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান ও তাঁর লোকজন ছিলেন। ঘটনার পরদিন সকালে তাঁদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। সেদিন পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে অস্ত্র, ইয়াবা, ৩৮টি ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযানকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আর দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় একই বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি করে আলাদা মামলা করা হয়। ইরফানের দুই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।