আগস্ট ৩০, ২০২২, ০৬:০৫ পিএম
১৯৭৭ সালে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের গুম ও খুন করেছে মন্তব্য করে তার মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘১৯৭৭ সালে খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা’ শীর্ষক ব্যানারে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি ছিলেন বর্ণচোরা মুক্তিযোদ্ধা। ওয়ার কাউন্সিল গঠন করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। যারা ১৯৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সভায় সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার কবর অপসারণ, ১৯৭৭ সালে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণা করা এবং প্রত্যেককে সর্বোচ্চ র্যাংকে পদোন্নতি দেখিয়ে সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়াউর রহমান প্রহসনের বিচারের নামে ১১০০ জনের বেশি সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, “ আরও কয়েক হাজার সদস্যকে গুম করা হয়েছে। তারা প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রহসনের বিচারে কৌশলে তাদের খুন ও গুম করেছে জিয়া। কমিশন গঠন করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা উচিত।”
পৃথিবীতে মরণোত্তর বিচারের নজির আছে উল্লেখ আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “বহু দেশে মরণোত্তর বিচার হয়েছে। সাজা না পেলেও ইতিহাসে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে অনেকেই। খুনি জিয়া ও তার সহযোগীদের মরণোত্তর বিচার দাবি হোক।”
তিনি আরও বলেন, “এটা কোনো বেআইনি হবে না। কী ঘটেছে সেটার সত্য উদঘাটন করাও আইনের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকে জিয়ার মরণোত্তর বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয় ও জরুরি। কমিশন গঠন করে এই হত্যার বিচার করতে হবে।”
আলোচনা সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, “জিয়াউর রহমানের মতো একজন হৃদয়হীন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিগত সময়ে যদি কাউকে তৈমুর লঙ, চেঙ্গিস খান, নাদির শাহ উপাধি দিতে হয়, তাহলে খুনি জিয়াকে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা এবং ১৯৭৭ সালের হত্যাকাণ্ডের মূল নেতৃত্বে ছিল খুনি জিয়াউর রহমান। মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়ার অবস্থান হয়েছে মীর জাফরের পাশে। যুদ্ধেও তিনি পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছেন।”
এসময় অন্যদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেলারেল হেলাল মোর্শেদ বীর বীক্রম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক উপস্থিত ছিলেন।