অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করাসহ অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ফাঁসের ঘটনার পর নৈতিক স্খলনের দায়ে পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। রবিবার ও সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) এই দুইদিনে তার বিরুদ্ধে দেশের ৭টি জেলায় মামলার আবেদন করা হয়েছে।
ঢাকা
নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। অবশ্য সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি খারিজের আদেশ দেন।
সোমবার আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর মামলা গ্রহণ করার মতো কেনো উপাদান না থাকায় বিচারক মামলার আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন।
এর আগে, রবিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের সেরেস্তায় এ মামলার আবেদন করা হয়।এ অভিযোগে ডা. মুরাদ হোসেন ছাড়াও আসামি করা হয় মহিউদ্দিন হেলাল নামে অপর এক ব্যক্তিকে। মামলার আবেদন করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী।
রাজশাহী
ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন বগুড়ার এক আইনজীবী।
রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী ওই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ডা. মুরাদ হোসেন ছাড়াও আসামি করা হয়েছে মহিউদ্দিন হেলাল নামে অপর এক ব্যক্তিকে। এদিকে আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছন বিচারক জিয়াউর রহমান।
মামলার বিষয়ে আজ সোমবার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।শুনানি শেষে দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান মামলাটি খারিজের আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম
পদত্যাগকারী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও তার সাক্ষাৎকার নেওয়া সেই মুহাম্মদ মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার। রোববার (১২ ডিসেম্বর) সাইবার ট্রাইব্যুনালের আদালত তোফাইল হাসানের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়।
খুলনা
খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন। রবিবার(১২ ডিসেম্বর) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম খুলনা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোল্লা গোলাম মওলা ওই মামলার আবেদন করেন।
সিলেট
রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তানভীর আক্তার খান।
ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়। আদালত ২০০ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করে আগামী ১৫ তারিখ আদেশ দেবেন মর্মে মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন।
বরিশাল
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে বরিশালের আদালতেও মামলার আবেদন করা হয়। সোমবার (১৩ ডিসেম্বর)বেলা সাড়ে ১১টায় মো. আবুল কালাম আজাদ নামে এক আইনজীবী বাদী হয়ে বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির আবেদন করেন।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন।
ময়মনসিংহ
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেজাউল করিম চৌধুরী ময়মনসিংহ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন। সোমবার মামলার আবেদন করেন তিনি।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, “গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোন সময় সিবিএম এর উপস্থাপক নাহিদ তথ্যমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের একটি সাক্ষাতকার নেন। ওই সাক্ষাতকারে তথ্যমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল ভাষায় নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দেন।” এই বক্তব্য মুসলিম ধর্মীয় অনুভূতি ও রাজনৈতিক শ্রেণিগোষ্ঠির মধ্যে অসন্তোষ এবং দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টির বহি:প্রকাশ বলে মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়।