তেলের দাম তলানিতে: দেশে দাম কমবে কবে?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২০, ২০২১, ১১:৩৯ পিএম

তেলের দাম তলানিতে: দেশে দাম কমবে কবে?

গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর শনিবার (২০ নভেম্বর) সবচেয়ে কম। বর্তমানে অপরিশোধিত তেলের দর ব্যারেলপ্রতি ৭৬.১০ ডলারে নেমে এসেছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে তেলের দাম কমার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশ কি কমাবে?

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়া নিয়ে চিন্তিত হয় মূলত অক্টোবর থেকেই। এর আগের সাত বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। এই সাত বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমায়, তা–ও অতি সামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা। অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। এর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন খাতের ভাড়া সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে ২৭ শতাংশ।

৬ নভেম্বর এক ভার্চুয়ালি ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও দাম কমানো হবে। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। আমরা জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করেছি। ভারতসহ সারা বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধি এবং পাচার ঠেকাতেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশের তেলের ক্ষেত্রে ভতুর্কির পরিমান কমাতে এমন দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদি এখন দাম কমানো হয় তাহলে আবারও হুট করে দাম বৃদ্ধি পেলে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সব মিলিয়ে এখন পর্যবেক্ষনে রয়েছে সরকার। চীনের সিদ্ধান্তে কমেছে তেলের দাম । যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ চীন রেখেছে বলেই তেলের দাম কমেছে বলে ধারণা করছে বিশ্লেষকরা।

বাইডেন প্রশাসন তার মিত্রদের কাছে অনুরোধ করেছিল যাতে দেশগুলো তাদের সংরক্ষিত (রিজার্ভ) তেল বাজারে ছেড়ে দেয়। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে চীন এ কাজটিই করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন অনেক দিন ধরেই বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত। কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ ও ট্রাম্পের পরাজয় সেই বাণিজ্যযুদ্ধ কিছুটা কমিয়ে রাখলেও একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু চীন যে যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুরোধ রাখবে তা অনেকেই আশা করেননি। তবে চীনের এই সিদ্ধান্ত বাজারকে প্রভাবিত করেছে, কমেছে তেলের দর।

তেলের দর গত অক্টোবর থেকে বাড়া শুরু করেছিল মূলত তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের এক সিদ্ধান্তে। তারা আগের লোকসান তুলে আনতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমিয়ে দেয়। যেহেতু বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে, ফলে বাড়ছিল তেলে চাহিদা। আবার কোভিড সংক্রমণের সময় সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এমনিতেই বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চিন্তিত মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ে। এ রকম একসময় চাহিদা বৃদ্ধি ও জোগান কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের দর ব্যারেলপ্রতি ৮৫ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সালের পরে এটাই ছিল সর্বোচ্চ দর।

Link copied!