নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশ (নাসিক) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ১৯২টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট।
এদিকে ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ১৪৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরই মধ্যে বেসরকারিভাবে বিজয়ী কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন প্রাঙ্গণে বেসরকারিভাবে ২৭ জন কাউন্সিল ও ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের নাম ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের মধ্যে বেশিরভাগই টানা দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচিত সাধারণ কাউন্সিলররা হলেন
১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর বিএনপির মো. ইকবাল হোসেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের শাহজালাল বাদল, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নুর উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের মতিউর রহমান মতি, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান রিপন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন মোল্লা, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ইস্রাফিল প্রধান বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের ইফতেখার আলম খোকন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির অহিদুল ইসলাম ছক্কু, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর বিএনপির মাকসুদুল আলম খন্দকার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনিরুজ্জামান মনির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের অসিত বরন বিশ্বাস, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক প্যানেল মেয়র ওবায়দুল্লার ভাতিজা আওয়ামী লীগের রিয়াদ হাসান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল করিম বাবু, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমিক লীগ নেতা কামরুল হাসান মুন্না বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
১৯ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির মোখলেছুর রহমান চৌধুরী, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির মোহাম্মদ শাহেনশাহ, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র শাহিন মিয়া, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সুলতান আহমেদ ভূইয়া, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগরের সভাপতি আবুল কাউসার আশা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর জাতীয় পার্টির আফজাল হোসেন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর বিএনপির এনায়েত হোসেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর বিএনপির মো. সামসুজ্জোহা এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সিরাজুল ইসলাম জয়ী হয়েছেন।
সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর
এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে বিজয়ী ৯ জন জয় পেয়েছেন। ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মাকসুদা মোজাফফর, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মনোয়ারা বেগম, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোসাম্মাৎ আয়শা আক্তার দিনা, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মিনু আরা বেগম, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে শারমীন হাবিব বিন্নী, ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আফসানা আফরোজ বিভা, ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে শিউলি নওশাদ, ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে শাওন অংকন এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে সানিয়া আক্তার।
প্রসঙ্গত, রবিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচনে সব কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়। কোনো ধরণের অঘটচনা ছাড়াই নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৯ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৮ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন ভোটার।