আটলান্টিক হয়ে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর। দুই সপ্তাহ ধরে বিশ্বের সমুদ্রসীমার বেশির ভাগ অঞ্চলজুড়ে উষ্ণ বাতাসের প্রবাহ বইছে। ভারত মহাসাগরের শেষ সীমা বঙ্গোপসাগরেও পাওয়া যাচ্ছে একই ধরনের উষ্ণতার পরশ।
বিশ্বের অধিকাংশ সমুদ্রসীমায় আবহাওয়ার ওই অস্বাভাবিক আচরণে এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে শুরু হয়েছে তীব্র দাবদাহ। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ছে। শনিবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত ৪০ বছরের মধ্যে জুলাই মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। আর শুক্রবার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯৮২ সালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আবহাওয়াবিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থাগুলো বলছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি এলাকাজুড়ে এখন তীব্র দাবদাহ বইছে। ইউরোপ থেকে শুরু করে চীন, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়াজুড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। বৈশ্বিক আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণের প্রভাব পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের ওপরেও পড়ছে। চলতি বছরের বড় সময়জুড়ে আবহাওয়ার ওই আচরণ থাকতে পারে। প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে এখন আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা এল নিনো সাউদার্ন ওসিলিয়েশন–এনসো এবং ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে ‘দ্বিচক্র–আইওডি’র প্রভাব তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে বর্ষার প্রধান উৎস মৌসুমি বায়ু একবার নিষ্ক্রিয় ও আরেকবার সক্রিয় আচরণ করছে।
এরই মধ্যে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর ও অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেওয়া আলাদা দুটি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ভারত মহাসাগর দ্বিচক্র–আইওডি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে ভারত মহাসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি উষ্ণ রেখা তৈরি হয়েছে। যে কারণে মৌসুমি বায়ুর অক্ষরেখা বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়ে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। বর্ষায় সাধারণত ওই অঞ্চলজুড়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকে আর জুন–জুলাই ও আগস্টজুড়ে টানা বৃষ্টি ঝরায়। বর্তমানে মৌসুমি বায়ুটি ভারতের গুজরাট ও পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া, করাচিসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে পাকিস্তানে শুধু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছে।