জুলাই ৪, ২০২২, ১১:৫৬ পিএম
অনলাইন বেচাকেনার প্লাটফর্ম ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার বিরুদ্ধে গ্রাহকের সাড়ে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং আইনে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেন মামলাটি দায়ের করবেন। সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, শেখ সোহেল রানা নিজের পদ–পদবি আড়াল করে দুর্নীতি–সম্পৃক্ত অপরাধে ই-অরেঞ্জ নামে এমএলএম কোম্পানি খোলেন। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর নিজ নামে ও তাঁর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে পরিচালিত ৬টি ব্যাংকের ৩১টি হিসাবে মোট ২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা জমা করেন। পরে এই টাকা তিনি তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২–এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪–এর ২৭ (১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
গত ১৬ মার্চ সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাথায় নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্দায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েন।
মোট ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৭ আগস্ট প্রতারণার শিকার গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে প্রতারণার শিকার আরও ৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন—ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, আমানউল্ল্যাহ, বিথী আক্তার, কাউসার আহমেদ ও পুলিশের বনানী থানার বরখাস্ত পরিদর্শক সোহেল রানা।
আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা অপরাধমূলক একাধিক কাজে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন বিএসএফের কর্মকর্তারা।