মে ৩, ২০২৩, ০৪:২৭ পিএম
এবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুরে কথা বললো জাপান। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। জাপান বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায় না বলেও তিনি জানান।
জাপানের টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করতে বুধবার রাজধানীর জাপান দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার টোকিও থেকে ঢাকায় ফিরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়। এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে যারাই ক্ষমতায় থাকুক জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, “দুই দেশ একটি ‘অত্যন্ত বিস্তৃত ও লক্ষ্যভিত্তিক' অংশীদারিত্বের দিকে মনোনিবেশ করছে। আমাদের সম্পর্ক বিস্তৃত অংশীদারত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত হয়েছে। কৌশলগত অংশীদারত্ব মানে শুধু রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু নয়।”
প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে ইওয়ামা কিমিনরি বলেন, “অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক ‘লাভজনক' সহযোগিতা থাকা উচিত। প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে আগ্রহী জাপান। এ লক্ষ্যে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সহায়তা নিয়ে আলোচনা চলছে।” দুই দেশ বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, এ সফরে উভয় পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বানও জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইওয়ামা কিমিনরি বলেন, “বংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরের আগে বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের আইপিএসের সাথে জাপানের আইপিএসের অনেক সামঞ্জস্য রয়েছে। এর ফলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে উভয় দেশ আগামীতে একযোগে কাজ করতে সক্ষম হবে।”
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানায়, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করতে চায় না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দফতরের প্রধান উপ- মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল একথা বলেন।
সাংবাদিকের প্রশ্নটি ছিল-বাংলাদেশে প্রধান একটি বিরোধী দল জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং পরে এটিকে 'অন্যায্য ও অন্যায় নির্বাচন' বলে দাবি করতে পারে। এমন পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে মোকাবিলা করবে?
এই প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস বিভাগের এই সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, “অভ্যন্তরীণ, ঘরোয়া নির্বাচন হওয়ায় এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই।”
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “যেহেতু এটি নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই যুক্তরাষ্ট্র চায় যে তা অবাধ ও সুষ্ঠু হোক এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হোক।”
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত জানানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে একই কথা জানাল জাপান।