পটুয়াখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা আলো জ্বালতে পেরেছি এটাই আমাদের সাফল্য। একসময় পটুয়াখালী অবহেলিত এলাকা ছিলো, সরকার এই এলাকায় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার ফলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। আমি পটুয়াখালী বাসির প্রতি অনুরোধ জানাই, যার যতটুকু জমি আছে, ততটুকু জমিকে কাজে লাগান। বাংলাদেশ বিনির্মানে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা মাধ্যমে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে গেছি। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপই ভবিষ্যত প্রজন্মকে চিন্তা করা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জ্বত থাকে না। আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিলো। জ্বালানী খাত বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুতায়নকে তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার স্বপ্ন ছিলো তার। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিলো তখন ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনিরা। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিছিলেন, সেই সোনার বাংলা গড়তে আমরা কাজ করবো। তিনি বলেন, জাতির পিতার নাম কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারবে না।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ৯৮২ দশমিক ৭৭ একর জমিতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
বিসিপিসিএল সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরশনের (সিএমসি) মধ্যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হয়।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্মাণকাজ শুরুর পর ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে দিতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
পরে ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর আল্ট্রা সুপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কেন্দ্রটি। কিন্তু গোপালগঞ্জ সাবস্টেশনের ধারণক্ষমতা কম থাকায় এবং গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন পর্যন্ত সরবারহ করতে পারছে না বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।তবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে পুরো ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দিতে সক্ষম হবে পাওয়ার প্লান্টটি।প্রতিদিন এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন হবে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা।
পায়রায় কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর মধ্য দিয়ে ২০২০ সালেই বাংলাদেশ আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল ক্লাবে প্রবেশ করেছে। আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৩তম এবং এশিয়ায় সপ্তম।