অক্টোবর ১৫, ২০২২, ০১:৫৯ এএম
পার্লার সেবার কথা বলে বাসায় ডেকে এক বিউটিশিয়ানকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই শিক্ষার্থীকে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার তাদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী। রিমান্ড মঞ্জুরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিয়াম ও রিয়াদ দুজনেই বলেন, তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে।
রিমান্ডপ্রাপ্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন মো. রিয়াদ ও ইয়াছিন হোসেন ওরফে সিয়াম। আজ শুক্রবার বিকালে তাদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। আদালত দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রাজধানী শুক্রাবাদে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এই বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী শ্যামলীতে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ধর্ষণের শিকার বিউটিশিয়ান নারী হাজারীবাগ এলাকায় বসবাস করেন। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সেখানে তিনি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে বাসায় গিয়ে নারীদের ফেসিয়ালসহ বিউটি পার্লারের সেবা দিতেন। পেজে দেওয়া নম্বরে গত ১১ অক্টোবর মেয়ে কণ্ঠে সেই নারীকে ফোন দেওয়া হয়। জানানো হয়, শুক্রাবাদ এলাকায় ফেসিয়াল সেবা দিতে হবে। সাভার থেকে সে বিউটিশিয়ান শুক্রাবাদের উদ্দেশে রওনা হন। রাস্তায় থাকতেই একটি ছেলে কণ্ঠে (রিয়াদ) তাঁর অবস্থান সম্পর্কে বারবার জানতে চাওয়া হচ্ছিল। সন্ধ্যার পর সেই নারীকে রিয়াদের শুক্রাবাদের ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় খালি বাসায় রিয়াদ তাঁর বন্ধু সিয়াম ও তাঁর আরেক বন্ধু জিতু মিলে সেই নারীকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে দেয় তারা। ওই নারী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে উল্লেখ করে ডিসি তেজগাঁও বলেন, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত তিনজনই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। গ্রেপ্তার রিয়াদ ও সিয়াম সরাসরি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এ ধর্ষণের সঙ্গে তাঁদের আরেক বন্ধু জিতুও সরাসরি জড়িত।
আজিমুল হক বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগ দিতে প্রথমে ধানমন্ডি থানায় গেলে ঘটনাস্থল ধানমন্ডি থানার অধীন না হওয়ায় শেরেবাংলা নগর থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শেরেবাংলা থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকজন পলাতক।
অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ধরনের ঘটনা অনেকটাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে উল্লেখ করে বিভাগের পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘বাসা–বাড়িতে যে কোনো সার্ভিস দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহক এবং সেবাদানকারী ব্যক্তিদের আরও সতর্ক হতে হবে।’