কুমিল্লার জনগণ আমার সাথে আছে আর আমি জনগণের সাথে থাকতে চাই, এটা আমার ইচ্ছা। আর তাই আমার অসম্পুর্ণ কাজ শেষ করতেই কুমিল্লার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু আমার কাছের মানুষদের ইচ্ছায় আমি নির্বাচনে লড়বো। আমার এলাকার জনগণ আমার সাথে আছে। আমি জনগণের স্বার্থে তাদের নেতা হয়ে কাজ করতে চাই।
বিএনপি থেকে বহিষ্কার হলেও জনগণের স্বার্থে নির্বাচন করবে বলে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে মুঠোফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মনিরুল হক সাক্কু।।
কুমিল্লার বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু নির্বাচনে অংশ নিলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে সাফ জানিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাক্কু। সংগ্রহ করেছেন মনোনয়ন ফরম। দলীয় পদ বড় নাকি সিটি করপোরেশন নির্বাচন এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, গত দুইবার ধরে সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করায় এলাকার মানুষদের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়েছে, আর তাই আমি জনগণের সাথে থাকতে চাই, এটা আমার ইচ্ছা। তাই আমি আবার সিটি করপোরেশন নির্বাচন করবো।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ফলে কুলিল্লা সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ ভোটে অংশ নিলে নিশ্চয়ই দল তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের তৈমুর আলম খন্দকার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় প্রথমে তার পদ স্থগিত করা হয়। পরে তাকে বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিলে আপনার ভাগ্যও যদি হয় তৈমুরের মত তাহলে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করলে আসলে আমার কিছু করার নাই, দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিব। কিন্তু এই দল আমি ছাড়তে পারবো না কারণ ৭৮ সাল থেকে এই দল করি। আমি রাজনীতি করি দলের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, আমার নিজের কোন স্বার্থ নাই। তাই আমাকে যদি বহিষ্কার করে, করুক। আমি যা করি সব পার্টির জন্যে করি আর তাই এই নির্বাচনও আমি পার্টির জন্যে করছি বলে মনে করি।
জানা যায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দুটি ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন। আরেক অংশের কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এ গ্রুপিং। বিগত কুসিক নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় ইয়াছিন গ্রুপ সাক্কুর পক্ষেই কাজ করেছে। এতে সাক্কুর নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া অনেকটাই সহজ হয়।
কিন্তু এবারের নির্বাচনে ইয়াছিন গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজামুদ্দিন কায়সার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এতে সাক্কু শিবির অনেকটাই চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমার বিপক্ষে কে নির্বাচন করল সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। নগরবাসী আমার বিগত দিনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে আশা করি আমাকেই ফের তাদের নগরপিতা হিসাবে নির্বাচিত করবে বলে আমি আশাবাদী।