সারাবিশ্বে চলমান করোনা মহামারির মধ্যেও শিশুদের বুকের দুধ পান করানোয় মায়েদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে বিশ্বের ৯৮টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ।
মায়ের দুধ পান করানোর বিষয়ে সচেতন করার আন্তর্জাতিক সংগঠন-ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভ’র (ডব্লিউবিটিআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) প্রকাশিত ডব্লিউবিটিআই’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০টি সূচক ও কর্মসূচির ওপর ভিত্তি করে দেশগুলোকে লাল, হলুদ, নীল ও সবুজ রঙের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুটি দেশ সবুজ রংয়ের মর্যাদায় যেতে পেরেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ৯১ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে প্রথম হয়ে ‘সবুজ জাতি’র মর্যাদায় যাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। আর ৯১ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের কেবলই নিচে রয়েছে সবুজ জাতির মর্যাদা পাওয়া আরেক দেশ শ্রীলঙ্কা। ডব্লিউবিটিআই’র ওই তালিকায় ভারত রয়েছে ৭৯তম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ৩৯ ও মালদ্বীপ ১৯তম স্থানে রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভের (ডব্লিউবিটিআই) প্রতিবেদন অনুযায়ি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পরে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফগানিম্তানে। শীর্ষ দশে অবস্থান করা অন্যদেশগুলো হলো যথাক্রমে কিউবা, গাম্বিয়া, বলিভিয়া, তুরস্ক, এল সালভেদর, নাইজার, কেনিয়া ও কুয়েত।
প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভ’র (ডব্লিউবিটিআই) বৈশ্বিক সমন্বয়ক অরুণ গুপ্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের এ অর্জন ২০০৫ সাল থেকে প্রচেষ্টার ফসল। এ অর্জন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রতি সরকারের উচ্চমাত্রার অঙ্গীকারের প্রতিফলন।’বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রণালয় মায়ের বুকের দুধ পান করানোর প্রোগ্রামটি জোরালোভাবে তদারকি করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তত্ত্বাবধানে একটা নির্দিষ্ট মানদণ্ড বজায় রেখে বাংলাদেশে ২০০৪ সাল থেকে নবজাতক ও শিশুদের মায়ের বুকের দুধ পান করানোর প্রোগ্রামটি শুরু হয়।
এই অর্জনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. এস কে রায় বলেন, ‘২০২০ সালের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ এই অগ্রগতি করেছে। যেখানে ১০টি সূচকের পাঁচটিতেই পুরো নম্বর পেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নীতি ও কর্মসূচি অনুসরণ করে ও বৈশ্বিক মানদন্ড বজায় রেখে বিভিন্ন দেশের শিশু ও অল্পবয়স্ক শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৪ সালে যাত্রা করে ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভ (ডব্লিউবিটিআই)।
সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সুস্থ জীবনের জন্য শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বে প্রতিদিন মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে খরচ হয় প্রতিদিন ১০০ কোটি ডলার। তাছাড়া মায়ের বুকের দুধ প্রতি বছর ৭ লাখ শিশুর জীবন বাঁচায় বলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।