ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১, ১১:২৯ এএম
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ, সাংবাদিকসহ ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। রবিবার (২৮ (ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, অনুমতি ছাড়াই প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শুরু করে ছাত্রদল। ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা সকাল ১০টার দিক থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তারা রাস্তায় নামলে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। ভাঙচুর করেন গাড়ি ও আশপাশের ভবন। পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে ঢুকে পড়লে প্রেসক্লাবের গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনে। এই সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও তিনি আর আসেননি।
সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ কমপক্ষে ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। অন্যদিকে ছাত্রদলের ছোড়া ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান। সংঘর্ষের পর দুপুরে তিনি বলেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মসূচি পালন করতে হলে পুলিশ কমিশনারের অনুমতি লাগে। তারা অনুমতি ছাড়া এখানে এসেছিল। তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন, যেটা পূর্বপরিকল্পিত মনে হয়েছে। পুলিশের পাঁচ-সাতজন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমোনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রদল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
গত ০৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভায় জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই বৈঠকে জিয়াউর রহমান ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শরিফুল হক ডালিম, নুর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার সামিল। সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।