ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রুপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের স্থায়ী কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘‘স্থায়ী কমিটির সভায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার এই আলোচনা আমরা শুরু করবো।”
‘‘আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলব। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা চূড়ান্ত যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে রুপরেখা, সেই রূপরেখা তৈরি করা হবে।”
প্রথম দিন মঙ্গলবার বিকালে নাগরিক ঐক্যের সাথে সংলাপে বসবে বিএনপি। নাগরিক ঐক্যের তোপখানা রোড কার্যালয়ে এই সংলাপ হবে বিকাল ৫টায়।
আলোচনা কী ২০ দলীয় জোটের সাথে হবে না অন্যান্য দলের সাথেও হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ সকলের সঙ্গেই হবে, অল দ্যা পলিটিক্যাল পার্টিসের সঙ্গে।”
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘কথা তো বলতে হবে। অবশ্যই । তাদের সাথে কথা না বললে কেমন করে হবে। সকলের সঙ্গেই তো কথা বলতে হবে।”
২০ দলীয় জোট থাকবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ ২০ দলীয় জোট তো আমরা এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করি নাই। এই জোটের কী হবে সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজিড করবো।”
গত ২৩ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব তুলে ধরেন।
সংলাপের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই আলোচনার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং এই ফ্যাসিবাদী সরকার যারা মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং আজকে অর্থনীতি, দেশের সমস্ত যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে সেই সব প্রতিষ্ঠানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা- এটাই হচ্ছে আমাদের মূল্য লক্ষ্য। এজন্য আন্দোলন তৈরি করতে হবে। এই আন্দোলন তৈরি করতে ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে এই আলোচনার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।”
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মূল যে দাবিগুলো আছে, প্রথম-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সমস্ত রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি, দুই. এই সরকা্রকে পদত্যাগ করতে হবে, তারা পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, তিন. সংসদ বাতিল করতে হবে এবং তারপরে পূনগঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংসদ গঠন হবে, সরকার গঠন হবে। এগুলো হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো থাকবে।”
‘‘এখন অন্যান্য গুলোর সঙ্গে এই আলোচনা করব এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে তাদের অন্যান্য দাবি নিয়ে একক দাবিনামা তৈরি করা হবে। একক দাবিতের প্রেক্ষিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করবো।”
এই একক ঐক্যের জোটের কী নামকরণ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা একে জোট বলছি না, অন্য কোনো কিছু বলছি না। আলোচনা করার মধ্য দিয়ে ফরমেট, ফ্রম নির্ধারিত হবে।”