কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। আটককৃত ব্যাক্তির নাম খলিল।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) সকালে তাকে আটক করে পিবিআই। এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জুর মোরশেদ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজারের উখিয়া থানায় নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুই শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল বিকেলে কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে জানাজা শেষে দাফন করা হয় মুহিবুল্লাহর মরদেহ। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
মুহিবুল্লাহ খুনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা ও উদ্বেগ
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতা মুহিবুল্লাহকে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তারা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। মুহিবুল্লাহর পরিবার এবং বৃহত্তর রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি এ ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়। ইউএনএইচসিআর ক্যাম্পগুলোতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি ট্রেম্বলে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকিন বলেন, মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় তিনি দুঃখভারাক্রান্ত ও বিভ্রান্তি বোধ করছেন। বিশ্বজুড়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অধিকার আদায়ে তাকে সাহসী ও তুখোড় সমর্থক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মুহিবুল্লাহকে।
তিনি বলেন, তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বচ্ছা ও পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে এতে জড়িত ঘৃণ্য অপরাধীদের শাস্তির মুখোমুখি করা যায়।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্প-১ এ নিজ সংগঠনের অফিসে অবস্থানকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গাদের অন্যতম নেতা মুহিবুল্লাহ।