নভেম্বর ৪, ২০২১, ১০:১৫ পিএম
বর্তমান সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেজন্য নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।অন্যদিকে, তেলের দাম বাড়ানোকে অযৌক্তিক বলে মত দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের(জিএম কাদের)। বৃহস্পতিবার(৪ নভেম্বর) পৃথক সভায় তারা এসব কথা বলেন।
এছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ট্রাক পরিবহন শ্রমিকদের কর্মসূচিকে সমর্থন করা কথাও জানান বিএনপির এই নেতা।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরে নিজ বাসভবন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ সরকার নির্বাচিত নয়। কোথাও জবাবদিহি করতে হয় না। সুতরাং তাদের পকেট ভারি করতে ও ব্যবসা বাড়াতে তেলের দাম বড়িয়ে চলছে।’
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে, সেই সময়ে এই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো দ্রব্যমূল্যেকে আরও বৃদ্ধি করবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর একটা প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হবে। সেইসঙ্গে মানুষের জীবনের যে একটা ক্রয়ক্ষমতা সেটা হ্রাস পাবে। যে কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা প্রভাব পড়বে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করে না, পার্লামেন্টে জবাবদিহি করে না, নিজেদের খুশিমতো যা ইচ্ছা করার করে, সে সরকারের কাছে জনগণের কি মূল্য থাকতে পারে?
তিনি বলেন, “আমরা জানি যে, এলপিজি গ্যাস কারা আমদানি করে, ফুয়েল কারা আমদানি করে। সবকিছু মিলে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। এই সরকার দমনমূলক আচরণ করছে।” তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে যারা আন্দোলন করছেন তাদের সাথে একমত পোষণ করেন মির্জা ফখরুল।
টিসিবির পণ্যের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘টিসিবির পণ্য তো সাধারণ মানুষের জন্য। এটার দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম প্রতি বছর বৃদ্ধি করে আজকে মানুষের অবস্থা প্রায় শেষ করে দিয়েছে। ট্রাকশ্রমিকদের কর্মসূচিকে আমরা সর্মথন করি। আর আমরা কোনো কর্মসূচি দিব কি না তা ঢাকায় গিয়ে জানাতে পারব।’
তেলের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক: জিএম কাদের
এদিকে, অযৌক্তিকভাবে তেলে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে সরকোরের সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নূরুন্নবী মৃধার দলে যোগদান উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ব্যবসায়িক দৃষ্টি দিয়ে নয়, সেবার মনোভাব নিয়ে দেশ পরিচালনা করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লে মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। তেলের দাম বাড়লে পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। তার ওপর তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়বে।’
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের এই উপনেতা আরও বলেন,‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে এই অজুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, করোনাকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিলো, তখন তো তেলের দাম কমানো হয়নি।’ তখন যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়েছে সেই টাকা কোথায় গেলো জানতে চান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
জি এম কাদের বলেন, ‘ভর্তুকি দিয়ে হলেও তেলের দাম সহনীয় রাখতে হবে। এসময় তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯টি দেশের মধ্যে ১২৪তম। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূচকে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। এটা খুবই দুঃখজনক।