দেশব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব বাড়তে থাকলে সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষনা দেন। লকডাউনের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের সকল বিনোদনকেন্দ্র। এরপর কয়েকদফা লকডাউন শিথিল করা হলেও খোলা হয়নি বিনোদনকেন্দ্রগুলো। দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর খোলা হলো রাজধানী ঢাকার মিরপুরস্থ জাতীয় চিড়িয়াখানা।
পশু-পাখির সাথে সাক্ষাৎ করতে সকাল থেকেই ঢাকা সহ বিভিন্ন দূর-দূরান্তের মানুষ ঘুরতে আসে জাতীয় চিড়িয়াখানায়। একদিকে সাপ্তাহিক ছুটি অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর খোলা হলো চিড়িয়াখানা, সব মিলিয়ে যেনো সোনায় সোহাগা। তাই পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সকলেই চলে এসেছে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে।
চিড়িয়াখানার পশু-পাখির সাথে অনেকদিন সাক্ষাৎ হয়না। তাই খোলার দিনই পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সুদূর টাঙ্গাইল থেকে চলে এসেছে আব্দুর রাজিব। সারাদিন ঘোরাঘুরির পর তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন,’বহুদিন পরে ঢাকার বাইরে আসলাম। সেই কবে চিড়িয়াখানায় আসছি আর আসা হয়নি। তাই যখন শুনলাম চিড়িয়াখানা খোলা হবে সাথে সাখে সবাইকে নিয়ে প্লান করে ফেললাম’।
বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গাজিপুর থেকে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে আজগর আলী। তিনি দ্য রিপোর্ট এর কাছে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘বহুদিন পর দেখলাম পশু-পাখি। খুবই ভালো লাগছে। জায়গাটাও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ঘুরে খুবই মজা লাগছে’।
দীর্ঘদিন পর খোলা হল চিড়িয়াখানা, হঠাৎ মানুষজনের প্রবেশে পশু-পাখির কোন ক্ষতি হবে কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা অ্যানিমেল কেয়ারটেকার (জলহস্তী) নুরে আলম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘পশু-পাখিতো লকডাউনেই ভালো ছিলো। তবে চিড়িয়াখানার সাথে তো মানুষের সম্পর্ক রয়েছে, সেজন্য মানুষজন আসবেই। এখন পর্যন্ত পশু-পাখি ভালো আছে, পাশাপাশি তারা যাতে অসুস্থ না হয় সেজন্য আমরা সব সময় তাদের দেখাশোনা করছি।’
তবে হঠাৎ করে চিড়িয়াখানা খুলে দেওয়ায় পশু-পাখির ওপর একটু চাপ পড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা অ্যানিমেল কেয়ারটেকার (বাঘ) উমর ফারুক। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর মানুষজন আসছে। আর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় প্রচুর মানুষ এসেছে। তাই সকাল থেকে পশু-পাখিগুলো একটু চুপচাপ হয়ে গেছে। তবে কিছুদিন গেলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। পশুগুলো অভ্যস্ত হয়ে যাবে।’
সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চিড়িয়াখানা চালু করা হয়েছে বলে জানান চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. এমডি আব্দুল লতিফ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ’করোনার কারনে প্রায় সাড়ে ৪ মাস বন্ধ ছিলো চিড়িয়াখানা। তবে এবার আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই চালু করেছি। গেট থেকেই আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে সকলে প্রবেশ করে সেই ব্যবস্থা করেছি’।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। অনেকেই মাস্ক না পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এছাড়া অধিকাংশ দর্শণার্থীই সামাজিক দুরত্ব মেনে চলছেন না।