হাত ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে লাশ হল শিশু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১৩, ২০২১, ০৮:০৩ পিএম

হাত ভাঙার চিকিৎসা নিতে  গিয়ে লাশ হল শিশু

হাত ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে লাশ হয়ে মর্গে গেল তৃতীয় শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী সাজিদ (১০)। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সোলাইমান হোসেন মেহেদি দাবি করেছেন, অনভিজ্ঞ নার্স দিয়ে নিয়মবহির্ভূত ইনজেকশন পুশ করায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের উপজেলা সদরের দেওয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর হাসপাতালের নার্স ও কর্তৃপক্ষ পালিয়ে গেছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই শিশুর লাশ থানায় নিয়ে গেছে।

দেওয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক সোলাইমান হোসেন মেহেদির ভাষ্যমতে, সাজিদের অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র সঠিক ছিল। কর্তব্যরত নার্স হাইপাওয়ারের ভুল ইনজেকশন পুশ করেছেন। ওই ইনজেকশন ৫ থেকে ১০ মিনিট ধরে পুশ করার নিয়ম। অদক্ষতার কারণে দ্রুত ইনজেকশন পুশ করায় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হৃদযন্ত্রের ভাল্ব বন্ধ) হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়। 

সাজিদ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের সর্শিনারা গ্রামের জুয়েলের ছেলে। সে একই উপজেলার বিরকুসিয়া গ্রামে নানার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করত।

সাজিদের পরিবার জানায়, সাজিদ গত ৩ মার্চ নানার বাড়িতে বাইসাইকেল চালানোর সময় পড়ে গিয়ে বাম হাতের হাড় ভেঙে ফেলে। পরদিন তাকে মির্জাপুর দেওয়ান হাসপতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাতে ডাক্তার সোলাইমান হোসেন মেহেদি সাজিদের হাতে অস্ত্রোপচার করেন। সকালে সাজিদ মায়ের হাতে খাবার খায়। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত পিংকি ও শিফা নামের দুই নার্স সাজিদের শরীরে পরপর ইনজেকশন পুশ করে। নার্স শিফা ইনজেকশন পুশ করার পরই সাজিদ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাজিদকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দেওয়ান হাসপাতাল একটি কসাইখানা। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। 

সাজিদের মা সুমা বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, অপারেশনের পর আমার ছেলে ভালো ছিল। খাবারও খেয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলেছে। শনিবার সকালে সাজিদকে পিংকি নামের একজন নার্স ইনজেকশন দেয়। কিছুক্ষণ পর আরেকজন নার্স এসে আরেকটি ইনজেকশন দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাজিদ আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মারা যায়।

Link copied!