ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ 'বাংলার সমৃদ্ধি'র ২৮ নাবিক দেশে ফিরেছেন। আজ দুপুর ১২টা ১ মিনিটে তাদের বহনকারী উড়োজাহাজ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
উড়োজাহাজে থাকা এক নাবিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই নাবিকেরা রোমানিয়া থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে ইস্তানবুলে যান। পরে সেখান থেকে ঢাকার পথে রওনা হন।
গত ২ মার্চ জাহাজে রকেট হামলায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান তারা। তবে তাদের মতো ভাগ্য সহায় হয়নি জাহাজে তাদের আরেক সহকর্মী নাবিক হাদিসুর রহমানের। 'বাংলার সমৃদ্ধি' জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর প্রাণ হারান। প্রায় ২১ ঘণ্টা পর জাহাজটি থেকে নাবিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে একটি বাংকারে আশ্রয় পান তারা।
২ দিন পর মলদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌঁছান তারা। গতরাতে একটি বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশের উদ্দেশে বুখারেস্ট ত্যাগ করেছেন বাংলাদেশি জাহাজ ক্রুরা।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি তুরস্কের কারাদেনিজ এরেগলি বন্দর থেকে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। সেখান থেকে ইতালিতে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাদের।
পরের দিনই জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দরে পৌঁছায়।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহাজের ওই ক্রু জানান, 'আমরা যখন বন্দরে পৌঁছালাম তখন সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। ২৪ ফেব্রুয়ারি, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে।'
এরপর জাহাজটি ওই বন্দরেই আটকে থাকে।
তবে ২ মার্চ আটকে থাকার হতাশা পরিণত হয় ভয় আর আতঙ্কে।
নাবিক বলেন, 'বিকাল ৫টা ৫ মিনিটের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র জাহাজে আঘাত হানে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান সেই সময় নেভিগেশন ব্রিজে ছিলেন, ফোনে কথা বলছিলেন।'
সেসময় সহকারী প্রধান প্রকৌশলী, সেকেন্ড অফিসার ও ডেক ক্যাডেটও সেখানে ছিলেন।
হামলার পরপরই জাহাজে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ৩ জন প্রাণে বাঁচলেও হাদিসুর ফিরতে পারেননি।