পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তার ১৪ জন হেফাজতে, একজন পলাতক: সেনাসদর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম

পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তার ১৪ জন হেফাজতে, একজন পলাতক: সেনাসদর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর চাকরিতে থাকা ১৫ কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। একজন কর্মকর্তা পলাতক আছেন বলে জানিয়েছে সেনাসদর।

শনিবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিষয়ে সেনাবাহিনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান জানান, গত ৫ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সেনাবাহিনীর প্রমোশন বোর্ডের কার্যক্রম চলাকালে মেজর জেনারেল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একত্রিত ছিলেন। ওই সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। বোর্ড শেষ হওয়ার পর ৮ অক্টোবর দুপুরে জানা যায়, ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার চার্জশিট দাখিল হয়েছে এবং সেদিনই ২৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, ২২ অক্টোবরের মধ্যে গ্রেপ্তার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

পরবর্তীতে জানা যায়, পরোয়ানাভুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআর-এ এবং ১৫ জন চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন। সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে না পেলেও সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর।

৮ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের আদেশ পাওয়ার পরপরই ১৬ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়, এবং পরদিন ৯ অক্টোবর তাদের সেনাসদরে সংযুক্ত করা হয়।

চাকরিতে থাকা ১৫ কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন সেনাসদরের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তবে মেজর জেনারেল কবির নামের একজন কর্মকর্তা সেনাসদরের সঙ্গে যোগাযোগ না করে আইনজীবীর পরামর্শের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরে সেনাসদর তাকে ‘ইলিগ্যালি অ্যাবসেন্ট (অননুমোদিত অনুপস্থিত) ঘোষণা করে এবং তাকে ধরতে সব সীমান্তে সতর্কতা জারি করে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

প্রথম মামলায় র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতনের অভিযোগে ১৭ জন এবং দ্বিতীয় মামলায় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি)-এ নির্যাতনের ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

উভয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যিনি গত জুলাইয়ের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে আছেন তাঁর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং ডিজিএফআই-এর সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক।

মোট আসামিদের মধ্যে ২২ জনই কর্নেল থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।

Link copied!