আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষের সঙ্গে বসে সুরাহা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সকালে আখাউড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এদিন সকাল ১০টার দিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ঢাকা থেকে রেলযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নামেন। এরপর গাড়ি বহর নিয়ে নিজ উপজেলা কসবায় রওনা দেন তিনি। তখন এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর মেয়র কাজলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেনের সমর্থকদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর আজই প্রথমবারের মতো নিজের নির্বাচনী এলাকায় আসেন আইনমন্ত্রী। মন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য শোডাউন করেন চেয়ারম্যান মনির হোসেন। এদিকে মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলও দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
আইনমন্ত্রী ট্রেন থেকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন প্লাটফর্মে নামার পর চেয়ারম্যান মনির হোসেন ফুলের তোড়া দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এ সময় তাকজিল খলিফা কাজলের ভাই ফোরকান খলিফা মনিরকে নিয়ে কটূক্তি করেন।
মনির হোসেন স্টেশনে প্রবেশের ফটক পার করে ফিরে আসার সময় মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, পরাজিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দিন বেগ শাপলুর নেতৃত্বে একদল কর্মী-সমর্থক চেয়ারম্যান মনির ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়নের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় পাশের একটি মার্কেটে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন চেয়ারম্যান মনির। পরবর্তীতে সেখানে অবস্থানরত উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়নসহ কয়েকজনের ওপর হামলা হয়। এ সময় রেলওয়ে স্টেশন ও সড়ক বাজার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারকে হামলার শিকার হওয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন বলেন, “উপজেলা নির্বাচনে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করা হয়। আমরা এ ঘটনার বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে প্রতিকার দাবি করেছি। মন্ত্রী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”
বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় বড় আকারের কিছু ঘটেনি। যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সদা তৎপর।”
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আলোকপাত করা হলে আইনমন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের সঙ্গে বসে সুরাহা করা হবে।