আগস্ট ১৭, ২০২৩, ০৬:২২ পিএম
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করায় ছাত্রলীগের আরও ২৫ নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে জামালপুর জেলারেই ১৯ জন, অন্য ৬ জন নরসিংদী জেলার।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) জামালপুর জেলা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করীম ও নরসিংদী ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দল থেকে অব্যাহতি পাওয়ারা ছাত্রলীগের উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের পাশাপাশি কলেজ শাখা ইউনিটে ছিলেন।
যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে জামালপুরের পদ হারানো নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ইসলামপুর শাখা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, মেলান্দহ পৌর শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ আহামেদ, মেলান্দহ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান সেতু ও মেলান্দহ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য আশরাফুল সালেহীন রিয়াদ।
জামালপুর জেলা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করীম জানান, তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করা হচ্ছে।
এদিকে, একই কারণে নরসিংদীতে যাদেরকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন-মাধবদী থানা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুজন ভুঁইয়া, পলাশ উপজেলা শাখার সহসভাপতি মো. নাদিম মিয়া, একই উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান অপু, মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক জে এস জুনায়েদ, বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিব আহমেদ এবং মাধবদী উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন গণমাধ্যমকে বলেন, “যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে ফেইসবুকে তারা যেসব কথা লিখেছেন, তা ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থি। একজন যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে তারা এভাবে কথা বলতে পারেন না। এ কারণে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রকে সুপারিশ করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর ঘটনায় তার দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীরা তাৎক্ষণিক শোক জানাতে থাকেন। তাদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের পদধারী অনেক নেতাও শোক প্রকাশ করলে সংগঠনের মধ্যেই প্রশ্ন উঠে।
সমালোচনার মুখে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগ জেলা কমিটির ছয় জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই কারণে চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে,জেলা কমিটি কেবল সাময়িক বহিষ্কার করতে পারে। চূড়ান্ত বহিষ্কারের ক্ষমতা কেবল কেন্দ্রীয় কমিটির হাতে রয়েছে।
এবিষয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনগণমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ন্যূনতম সহানুভূতি ও সাফাই গাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে কেউ এই ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পাশাপাশি সব সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”