সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ন্যায়বিচারের অভয় দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, “ন্যায়বিচার হলে কে বিচার পাবে না! আইনে কি বলা আছে এই সম্প্রদায়ের হলে এই আদালতে যাবে, ওই সম্প্রদায়ের হলে ওই আদালতে যাবে? আইন একটা, কার সাধ্য আছে সেখানে বিভেদ করে এর রকম একটা, ওর রকম একটা। এটা হতে পারে না।”
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান তিনি। ড. ইউনূস বলেন, “বিমানবন্দরে নেমেই যেটা বললাম, এমন বাংলাদেশ আমরা করতে চাইছি যেখানে আমরা এক পরিবার। এই হলো মূল জিনিস। পরিবারেরা মধ্যে কোনো পার্থক্য করা, বিভেদ করা, এটার কোনো প্রশ্নই আসে না! আমরা বাংলাদেশের মানুষ- এটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এটা নিয়ে যেন আর কোনো বাদ-বিবাদ ইত্যাদি যেন না হয়।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা মুসলিম হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই- মানুষ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।”
তিনি আরও বলেন, “সব সমস্যার গোড়া হলো, আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো করেছি, সব কিছু পচে গেছে। এই কারণেই গোলমালগুলো হচ্ছে। কাজেই আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো ঠিক করতে হবে।”
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের বলতে হবে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেটা পেলে আমাদের বাক্-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে- যেগুলো আছে, আমরা নতুন কিছু বলছি না। আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য।”
গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনি শুনবেন না গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাসে আমরা হিন্দুপাড়া বলে বাদ দিয়ে মুসলিমপাড়ায় চলে গেছি। কখনো হয়নি। একসঙ্গে গেছি, একভাবে গেছি।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের মূল কাজটায় যেতে হবে। আপনাদের অনুরোধ, আপনারা বিভিন্ন খোপের মধ্যে চলে যেয়েন না। এই খোপ হলেই এর মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। একত্রে আসেন, এক আইন।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা এসেছি এক মানুষ, এক অধিকার। এর মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। আমাদের একটু সাহায্য করেন আপনারা, ধৈর্য ধরেন। করতে পারলাম কি পারলাম না সেটা পরে বিচার করবেন। যদি না পারি, আমাদের দোষ দিয়েন।”