কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে

দলমত নির্বিশেষে সবাই রাজনৈতিক কর্মসূচি করার সুযোগ পাচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ০৭:২৯ পিএম

দলমত নির্বিশেষে সবাই রাজনৈতিক কর্মসূচি করার সুযোগ পাচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

কূটনীতিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সকল দলমত নির্বিশেষে সবাই রাজনৈতিক কর্মসূচি করার সুযোগ পাচ্ছে। কারও বক্তব্য দেয়ায় বাধা ছিল না। 

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফে এ কথা বলেন তিনি।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো দলের না মন্তব্য করে মোমেন বলেন, তিনটি রাজনৈতিক দলকে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু, শান্তির নামে প্রলয়কারী ঘটনা ঘটানো হয়। পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করা হয় যা জাতির জন্য লজ্জার। 

প্রধান বিচারপতির বাড়িতে আক্রমণের বিষয়টি অস্বাভাবিক মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের অপরাধ কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এ কাজের কারণে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া উচিত। 

বিএনপির লোকেরা দেশে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে মন্তব্য করে মোমেন বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে বানচাল করতে বিএনপি এমনটা করছে। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার বদল হয়। এ সরকার শাসন তন্ত্র অনুযায়ী চলছে। রাম রাজত্ব কায়েম করে কোন কিছু হাসিল হবে না। কিভাবে, বিএনপি জো বাইডেনের নকল উপদেষ্টা বানিয়ে দুর্নাম করছে। 

দুই দিনের সহিংসতার কথা রাষ্ট্রদূতদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তাঁর লিখিত বক্তব্যে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার জন্য বিএনপিকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, বিএনপির সহিংসতা ও ভাঙচুরের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তারা ২৮ অক্টোবর একই কাজ করেছে।

সরকার ২৮ অক্টোবরের সহিংসতায় হতবাক হয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন আবার সহিংসতা চালাতে মাঠে নেমেছে। অতীত থেকে তারা কিছুই শেখেনি।

২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মীদের সহিংসতার বিবরণ দূতাবাসগুলোকে পাঠানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। এ বিষয়ে পুলিশের তৈরি করা কিছু প্রমাণ আজ ব্রিফিংয়ের সময় কূটনীতিকদের দেওয়া হয়।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও বিএনপি ব্যাপক সহিংসতা করেছে এমন অভিযোগ করেন মোমেন। তবে এবার দলটি পুলিশ ও বিচার বিভাগকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও বিচারপতিদের বাসস্থানে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে আগুন দেওয়া ও ছয়টি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ডাকা তিন দিনের অবরোধের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের হরতাল-অবরোধে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। 

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের ব্যাপারে বিদেশি কূটনীতিকদের বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এছাড়া ঘটনার অডিও-ভিডিও লিংকও দেওয়া হয়েছে। পুরো তথ্য লিখিতভাবে দেয়া হয়েছে।

শাহরিয়ার আলম আরও জানান, ৭টি রাষ্ট্র মিলে যে বিবৃতি দিয়েছে, অতীতের বিবৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সব রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিল। নির্বাচনে আসলে প্রচলিত সকল বিধিনিষেধ মেনে আসতে হবে। আগ বাড়িয়ে বিবৃতি দেয়াটা গ্রহণযোগ্য নয়।

বিফ্রিং শেষে সাংবাদিকদের সাথে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নীরবতার অর্থ পুরোপুরি একমত হওয়া নয়। সরকারের বক্তব্য জানানো হয়েছিল। উনাদের কাছ থেকে কোনো বিবৃতি আশা করি না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, সহিংসতামুক্ত, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রিফিংয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সরকারি ভাষ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় ২৮ অক্টোবরের সার্বিক ঘটনার অডিও-ভিডিও উপস্থাপন করা হয়।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!