সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ভাঙচুর এবং বিভিন্ন ট্রেনের বগিতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
কোটা আন্দোলনের কারণে এদেশের রেলখাতে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিশেষ করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। রেলওয়ের উচ্চপর্যায়ের এক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম প্রথম আলোর কাছে এই তথ্য এসেছে।
ইন্টারনেট পুরোপুরি সচল না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।
- মো. সাইফুল ইসলাম
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম)
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের দপ্তরপ্রধানদের নিয়ে গঠিত কমিটির ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুষ্কৃতকারীরা রেলের এই ক্ষতিসাধন করেছে। প্রসঙ্গত, প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী সুশীল কুমার হালদার কমিটির প্রধান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাণিজ্যিক বিভাগের, এরপর যান্ত্রিক বিভাগের।
কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী চারটি ট্রেনের ৪০টি কোচ ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি, চট্টলা এক্সপ্রেসের ১৩টি, জামালপুর এক্সপ্রেসের ছয়টি, পারাবত এক্সপ্রেসের আটটি ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের দুটি বগি ভাঙচুর করা হয়। কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের চারটি বগি পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া চট্টলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ও কর্ণফুলী কমিউটারের ইঞ্জিন ভাঙচুর করা হয়।
ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে অন্যান্য খাতের তুলনায় রেলওয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮-২৩ জুলাই বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেন চলাচল না করায় যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হবে। এর পরিমাণ ১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পূর্বাঞ্চলের আওতায় ঢাকা বিভাগের যাত্রীদের ফেরত দিতে হবে ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের যাত্রীদের ফেরত দিতে হবে ৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, “ইন্টারনেট পুরোপুরি সচল না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।”
এদিকে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর চট্টগ্রাম নগরের সিআরবিতে গত বুধবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।