অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মিরপুরে রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। অনেকে প্রিয়জনের ছবি হাতে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, পোশাক কারখানার ভেতরে ঢুকতে পারলেও এখনো রাসায়নিকের গুদামে প্রবেশ করা যায়নি। এই অবস্থায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরের ৩ নম্বর রোডের ওই রাসায়নিকের গুদামে ও পাশের ভবনে থাকা পোশাক কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় কয়েক হাজার উৎসুক জনতা ভিড় করছে। কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের স্বজনেরা ছবি নিয়ে আহাজারি করছেন। স্বজনদের খোঁজে পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে অগ্নিদুর্ঘটনাকবলিত স্থান ও এর আশপাশের সড়ক।
নিখোঁজ নারগিস আক্তারের বড় বোন লাইজু বেগম বলেন, ‘আমার বোন সকাল পৌনে ৮টায় কাজে আসে। সকাল ১১টায় খরব পাই আগুন লেগেছে। সেখানের একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পারি, কেউ ভেতর থেকে বের হতে পারেনি। এর পর থেকে আর কোনো খোঁজ পাইনি। এখনো কোনো খোঁজ নাই আমার বোন কোথায় আছে।’
ভাগনি সুলতানা ও তার স্বামী জয়ার ছবি হাতে ইয়াসিন নামের আরও একজন বলেন, ‘আমার ভাগনি ও ভাগনির জামাই তিন দিন আগে কাজে ঢুকেছে। আজ সকালে দুজন একসঙ্গে কাজে আসে। আগুন লাগার পর ফোন দিয়ে জানায়, তারা ভেতরে আটকে গেছে। এর পর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই।’
মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাগনি মাহিরা। গার্মেন্টসের তিনতলায় কাজ করত। তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। আগুন লাগার পর থেকে আমরা তাকে খুঁজছি। আশপাশের হাসপাতালেও খোঁজ নিয়েছি। কোথাও খুঁজে পাইনি। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছে ধৈর্য ধরতে।’
স্বজনদের অনেকে আবার ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। স্বজনেরা জানান, সকাল থেকে তারা আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজ করছেন। এখনো আগুন নেভাতে পারেনি। কাউকে উদ্ধারও করতে পারেনি। ভেতরে কী অবস্থা, তা-ও স্বজনেরা জানেন না।
এদিকে এখনো ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভাতে চেষ্টা করছেন। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা কাজ করছেন। এর মধ্যে দুটি অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায় অগ্নিকাণ্ডস্থল থেকে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। অগ্নিনির্বাপণ শেষে ভেতরের পরিস্থিতি জানা যাবে।