রাজধানীতে যৌন নিপীড়নের শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশই ১৪-১৬ বছর বয়সী কিশোরী। তাদের অধিকাংশই নিপীড়নের শিকার হয়েছে বিভিন্ন দিনে সকাল সাড়ে ১০টা-১১টার মধ্যে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক যৌথ গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন যৌন নিপীড়নের ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই গবেষণায়।
গবেষণায় উঠে এসেছে, নিপীড়নের শিকার এসব শিশু ও কিশোর–কিশোরীর বেশির ভাগই কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান।
গবেষণায় পাওয়া তথ্য চলতি মাসেই ‘চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ: আ স্টাডি অন দ্য কেসেস অব ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন থানায় পাওয়া যৌন নিপীড়নের বিভিন্ন অভিযোগ ও জরিপের ভিত্তিতে গবেষণাটি চালানো হয়। জরিপে ৯৪ ভুক্তভোগী মেয়ে ও ৫৬ জন ছেলে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী আছে ৫০ জন করে। বাকি ৫০ জন পথশিশু। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশির বা ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশের বয়স ১৪-১৬ বছরের মধ্যে। মোট ভুক্তভোগীর ২০ দশমিক ৬ শতাংশ ১৭-১৮ বছর বয়সী। এর বাইরে ১১-১৩ বছর বয়সী আছে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া ৮-১০ বছর বয়সীদের মধ্যে নির্যাতিতের হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এমনকি তিন-পাঁচ মাস বয়সী শিশু নির্যাতনের ঘটনাও রয়েছে, যার হার ১ দশমিক ১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত নিপীড়নের ঘটনাগুলোর মধ্যে ১২টি ঘটেছে পরিচিতদের মাধ্যমে। নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ছয়টি। আর পাঁচটি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে অপরিচিতদের মাধ্যমে। যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০টি ঘটেছে বাড়িতে, যার তিনটিতে জড়িত নিকট আত্মীয়। কোনো কোনো ভুক্তভোগী একাধিকবার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
এতে আরো দেখা যায়, রাজধানীতে যৌন নিপীড়নের শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে মাত্র ৩৪ শতাংশ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, বাকি ৬৬ শতাংশই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের বেশকিছু প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়। সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়, লিঙ্গবৈষম্য, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক প্রভাব, পুলিশের সন্দেহজনক আচরণ ও অভিযুক্ত পক্ষের হুমকির মতো কারণও বড় ভূমিকা রেখেছে।