চাকরি পেয়ে ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি পিএসসির আবেদ আলী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৯, ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম

চাকরি পেয়ে ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি পিএসসির আবেদ আলী

আবেদ আলী

অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার পর নিজের ভাইদের সঙ্গে কোনও ধরনের সম্পর্ক রাখেননি পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে মাদারীপুরের ডাসারের বালিগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম বোতলা গ্রামে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধিকে এই তথ্য জানান আবেদ আলীর ছোট ভাই সৈয়দ সাবেদ আলী। তিনি জানান, বাবার মৃত্যুর পর অভারের সংসারে জীবিকার তাগিদে সৈয়দ আবেদ আলী গ্রাম ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় গিয়ে কুলির কাজ করেছিলেন। পরে ব্যাচেলর বাসায় পরিচয় হওয়া এক বন্ধুর মাধ্যমে পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন আবেদ আলীর ছোট ভাই।

সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, বালিগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম বোতলা গ্রামের সৈয়দ আব্দুর রহমান ও জয়গুন নেছা তার বাবা ও মা। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে আবেদ আলী দ্বিতীয়। দুই ভাই করেন কৃষিকাজ। বাবাও পেশায় ছিলেন কৃষক। বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ৮ বছর বয়সেই ঢাকায় চলে আসেন এবং শুরু করেন কুলির কাজ। পরে কোনও একজনের পরামর্শে গাড়ি চালানো শিখে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণির সনদ সংগ্রহ করেন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোতে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি নেন। ১৯৯৭ সালে রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোডের পশ্চিম রাজাবাজার এলাকার একটি ব্যাচেলর মেসে থাকতেন আবেদ আলী। সেই মেসেই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এলাকার শাহিনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। শাহিনের মামা মেজবাহ সচিবালয়ে চাকরি করতেন। এই শাহিনের মাধ্যমেই পিএসসি চেয়ারম্যানের গাড়িচালক হিসেবে চাকরি জুটিয়ে নেন আবেদ আলী।

তবে পিএসসি চেয়ারম্যানের গাড়িচালকের চাকরির আশায় ওই কোম্পানির চাকরি ছেড়ে প্রায় ৬ মাস বেকার ছিলেন আবেদ আলী। এ সময়ে আবেদ আলীর ছোট ভাই সাবেদ আলী খিলগাঁও এলাকার মেরাদিয়াতে চানাচুর বিক্রি করতেন। বেকার আবেদ আলী মাঝেমধ্যেই ভাই সাবেদ আলীর কাছে ৩০০-৫০০ টাকা নিতেন মেসের খরচের জন্য। এরপর আবেদ আলীর চাকরি হলে তিনি অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। তবে চাকরি পেয়ে আবেদ আলী তার বড় ভাই জাবেদ আলী ও ছোট ভাই সাবেদ আলীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেননি। দুই ভাই এখনও কৃষি কাজ করেন এবং গ্রামে ভাঙা টিনের ঘরে থাকেন।

ঢাকা পোস্টকে আবেদ আলীর ছোট ভাই বলেন, “১৯৯৭ সালের দিকে আমি মেরাদিয়াতে চানাচুর বিক্রি করতাম। আবেদ আলী থাকতো ইন্দিরা রোডে। সে বেকার ছিল। মাঝেমধ্যেই আমার থেকে মেসের খরচের জন্য ৩০০-৫০০ টাকা নিত। তবে শাহিন নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে পিএসসিতে চাকরি হওয়ার পর ওই বছরই সে বিয়ে করে। বিয়ের পরে সে আমাদের পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। এখনও তার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।”

বিষয়টি নিয়ে বালিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, “আবেদ আলীরা পারিবারিকভাবে খুবই গরিব ছিল। তার পরিবার ১৯৮৮ সালে ইউপি থেকে পাওয়া চাল, গম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। আবেদ আলীর সঙ্গে তার অন্যান্য ভাইদের পারিবারিক সম্পর্ক নেই বলে আমি জানি।”

Link copied!