আগস্ট ৮, ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ইতিহাসের সাহসী নারী হিসেবে বেঁচে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেন, ফাস্ট লেডি হওয়া সত্বেও অতি সাধারণ জীবন যাপন ছিল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের। আজন্ম কষ্ট, বঞ্চনা এবং বিয়োগব্যাথা তাঁকে এক অসাধারণ মানবিক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করেছিল।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে “প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাঁর কোন জৌলুশ ছিল না, ছিল না কোন চাকচিক্য, অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন।।তাঁর চাল-চলনে ছিল শাশ্বত বাঙালির মধ্যবিত্ত নারীর আটপৌর রূপ। ছিল না কোন লোভ-লালসা বা শখ-আহ্লাদ।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “জীবনে কোন কিছু আবদার করে নাই স্বামীর কাছে বা শ্বশুরের কাছে। নিভূতে সকল কষ্ট সহ্য করেছেন। বঙ্গমাতাকে কাছ থেকে দেখার সামান্য সৌভাগ্য হয়েছে আমার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সেই মানবিক ও চারিত্রিক গুণাবলি দেখে আমরা বিমোহিত হই, তার সবগুলো গুণাবলি আর্জন করেছেন তার মাতা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধ পরবর্তীকালে বঙ্গমাতা দেশগঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরীব-এতিম-অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, স্বাধীনতোত্তর বিরাঙ্গনাদের পুনর্বাসনে তিনি বিশেষ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, রেখেছেন সক্রিয় ভূমিকা। বীরঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। শিশুদের প্রতিও ছিল তার অগাধ ভালবাসা, আমি মনে করি এই সকল মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন এবং সক্রিয় করে তুলেছিলেন।”
শেখ পরশ বলেন, “আওয়ামী লীগের কোন নেতা-কর্মীর অসুখ-বিসুখ হলে তাকে সাহায্য করা, যারা বন্দি তাদের পরিবারগুলো দেখা, কার বাড়িতে বাজার হচ্ছে না, তার খোজ-খবর নেওয়া, প্রয়োজনে নিজের গহণা বিক্রি করে নেতা-কর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।”
তিনি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের একটি মন্তব্য উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমাদের সময়ের খনা, এই সময়ের বেগম রোকেয়া, এই সময়ের চন্দ্রাবতী। তিনি আরও বলেন, আমাদের বঙ্গমাতার সুমহান ব্যক্তিত্ব ও অপরিসীম ত্যাগের সঙ্গে পরিচয় ঘটানোর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশমাতৃকার প্রতি নির্মোহ চিত্তে আত্মনিবেদনের তাড়নাকে জাগ্রত করা প্রয়োজন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “বঙ্গমাতার অবদান আরও বেশি প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও ত্যাগের মহিমা তুলে ধরে তার আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি। পরিশেষে বলতে চাই-সেই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যার অন্যতম হোতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ’৭৫ এ নির্বিচারে নারী-শিশু হত্যাকারীদের সাথে জড়িত ছিল।”
এসময় তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল বাঙালি জাতির উপর। কাজেই জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার আজ এই প্রজন্মের সময়ের এবং নৈতিক দাবি। জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং অচিরেই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মণি এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. তারানা হালিম। সভাপতিত্ব করেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।