এদেশে যা কিছু ঘটে ‘তাঁর’ ইঙ্গিতেই ঘটে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ৫, ২০২৩, ০২:২২ এএম

এদেশে যা কিছু ঘটে ‘তাঁর’ ইঙ্গিতেই ঘটে: মির্জা ফখরুল

বুধবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক পেশাজীবী কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল।

একদফার চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুই বছর ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছি। ২২ জনের প্রাণ গেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মানে এই না যে, কেউ আঘাত করলে তার প্রত্যাঘাত করব না। আগামীতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে এইবার দেশে-বিদেশে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। 

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক পেশাজীবী কনভেনশনে  তিনি এ কথা বলেন।

গত সোমবার (২ অক্টোবর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

এ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান দখলদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেছি, নিন্দা জানিয়েছি। তার বক্তব্য ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়- এ কথা বলেছি। তবে এ বক্তব্য থেকে যেটা বের হয়ে এসেছে তা হলো- এদেশে যা কিছু ঘটে তার ইঙ্গিতেই ঘটে।

ফখরুল বলেন, এই বার দেশে-বিদেশে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এর একটিমাত্র কারণ এবং তা হচ্ছে- তারা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা লন্ডনে বলেছেন যে, যেদিন তাকে ক্যান্টনমেন্ট ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল সেদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন- কোনোদিন যদি সুযোগ পান, তাহলে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে উচ্ছেদ করবেন এবং করেছেন। এখানে বিচার বিভাগের প্রয়োজন নেই। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রয়োজন নেই। তাঁর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তই সিদ্ধান্ত।

বিএনপি মহাসচিব ছোটবেলায় তাঁর পিতার কাছ থেকে শোনা ফার্সি সাহিত্যের একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, আমাদের ভাইদের মধ্যে যখন মারামারি হতো, তখন বাবা বলতেন- তোমরা কী করছ! হাম সু দিগা নিস্ত- আমি হচ্ছি অদ্বিতীয়। এখন ভাবে মনে হয়- শেখ হাসিনা অদ্বিতীয় হয়ে গেছেন। তাহলে সিজারের মতো ঘোষণা করে দেন যে, ‘আই এম দ্যা এমপেরর (আমিই সম্রাট)।

তিনি বলেন, তাঁর (শেখ হাসিনা) পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং এক ধরনের ঔদ্ধত্য- এ দেশ আমার, আমার ও আমার।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। এর বাইরে কোনো নির্বাচন হবে না। অবিলম্বে গণদাবি মেনে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা গঠন করার ব্যবস্থা নিন। তারপরই কেবল নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে, তার আগে নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারের দুর্নীতির কারণে দেশ চোরাবালিতে তলিয়ে গিয়েছে। পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কনভেনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

Link copied!