কক্সবাজার শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পাঠানো রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে এবং তাদের সুযোগ-সুবিধা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে ভাসানচরে যাচ্ছেন পশ্চিমা বিশ্বের কূটনীতিকেরা। শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় কর্মরত ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মোট ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক আবাসন ব্যবস্থাসহ যে বিপুল সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হয়েছে, তা দেখাতেই পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের জন্য এ সফরের আয়োজন করা হয়েছে।
ভাসানচরে এটিই হবে তাদের প্রথম সফর। এদের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের মিশন প্রধানরা এই সফরে থাকবেন।
সরকারের সংশ্লিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ভাসানচর সফরে পররাষ্ট্র ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার ও জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালকরাসহ সরকারে বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা ও উন্নয়ন সহযোগী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সেখানে যাবেন।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন কূটনীতিকেরা। এর ফলে ভাসানচর নিয়ে কূটনীতিকদের ভুল ধারণার অবসান হবে বলেও আশাবাদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে, গত মার্চের ১৭ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচর পরিদর্শনে যান। এরও আগে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তার আগে আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ভাসানচরে ১ লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে পাঁচ দফায় ১৪ হাজার ২০০ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।